লেখার ডাগর মাঠ


রবিবার, ডিসেম্বর ২৫

ভণ্ড সেকুলারবাদীদের মুখোশ ও ইসলামিক মৌলবাদীদের নৃশংসতা

১৯২৬ সাল ২৩ ডিসেম্বর , দিল্লিতে নিজের বাড়িতে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভুগছিলেন আর্য সমাজের নেতা স্বামী শ্রদ্ধানন্দ । ডাক্তারের নিষেধ ছিলেন কথাবার্তা বলার । আর্য নেতার ব্যক্তিগত সহকারী ধর্ম সিং তাঁর দেখ-ভাল্
করতেন । ২৩ ডিসেম্বর বিকালে স্বামী শ্রদ্ধানন্দের সাথে দিল্লির বাসভবনে আব্দুল রশিদ নামে এক যুবক এসে হাজির হলেন । স্বামীজির ব্যক্তিগত সহকারী ধর্ম সিংকে ওই যুবক জানায় , ইসলাম ধর্মের কিছু বিষয় নিয়ে তার কিছু আপত্তি আছে । সেই ব্যপারেই স্বামীজির সঙ্গে আলোচনা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন । কিন্তু ধর্ম সিং যুবকটিকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন স্বামীজির সঙ্গে এখন দেখা হবে না ।
ধর্ম সিংহের এই কথা শুনার পরও যুবকটি না গিয়ে দেখা করার জন্য জোড়াজোড়ি করতে থাকেন । খবরটা স্বামী শ্রদ্ধানন্দের কাছে যায় । শ্রদ্ধানন্দের আদেশে যুবকটিকে তাঁর কাছে নিয়ে আসা হয় । স্বামীজি যুবকটিকে বলেন- অসুস্থ একটু কাটলে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে । এরপর যুবকটি স্বামীজির ব্যক্তিগত সহকারী ধর্ম সিংহের কাছে জল খেতে চায় । ধর্ম সিং ভিতরে জল নিয়ে আসতে গেলে যুবকটি জামার ভিতর থেকে রিভলবার বের করে স্বামী শ্রদ্ধানন্দকে লক্ষ করে দু'বার গুলি চালায় । ( ঠিক যেনো লিলয় নীলের মত ঘটনা ) ঘটনার স্থলেই স্বামীজির মৃত্যু হয় । গুলির শব্দ শুনে শ্রদ্ধানন্দের সহকারী ধর্ম সিং ছুটে এলে তাঁকে লক্ষ করেও একটি গুলি চালায় । পরে অনুসন্ধান করে জানা যায় , আব্দুল রশিদ একটি মৌলবাদী ইসলামিক গোষ্ঠীর সদস্য ।
মোহন দাস করমচাঁদ গান্ধীর হত্যাকাণ্ডকে কোনো রকম সমর্থন না করেই বলছি-গান্ধীর হত্যাকাণ্ডের পিছনে যাঁরা সর্বদা হিন্দু মৌলবাদ , রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ ইত্যাদীর যারা ছায়া খুঁজে বেরান তাঁরা কিন্তু স্বামী শ্রদ্ধানন্দের এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে বরাবরই নীরব থেকেছেন । অথচ স্বামী শ্রদ্ধানন্দের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর বিচলিত ব্যথিত রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর একটি নিবন্ধে ( 'স্বামী শ্রদ্ধানন্দ ' প্রবাসী 'মাঘ' /১৩৩৩ সালে লিখেছিলেন ,………………… । ' তোমরা ক্রর হোয়োনা , তোমরা ভালো হও , নরহত্যার উপরে কোন ধর্মের ভিত্তি হতে পারে না ।'………………………।
এই ভাবেই ভারতের সেকুলারবাদীদের ভণ্ডরূপ ফোটে ওঠে । তাঁরা বারবার প্রমাণ করেছে যে , ভারতের ইসলামিক মৌলবাদকে এড়িয়ে চলার । এমন কী এইসব সেকুলারবাদীদের চলাফেরাতেও সন্দেহের গন্ধ আঁচ করা যায় । আমরা মাঝে মাঝেই গুজরাটের দাঙ্গা নিয়ে মাতি । প্রতিবাদি হতেও ছাড় দেয়না । কোন দাঙ্গাকে সমর্থন না করেই বলছি , এই ভণ্ড সেকুলার লেবেরল কে যদি প্রশ্ন করা হয় । বাবরির জন্য মুম্বাই ব্লাস্ট হয়েছে খুব সত্য কথা , তবে বলছেন না কেনো গোধরার জন্য গুজরাট দাঙ্গা হয়েছে । এই ভণ্ড সেকুলাররা গোধরা নিয়ে কোনো কথা না বললেও গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে তাঁরা ঢের প্রতিবাদি ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন