লেখার ডাগর মাঠ


শনিবার, জানুয়ারী ২৭

আমরা কি মানুষের বাচ্চা ?

কুকুরের পেটে যারা জন্ম নেয় তারা কুকুরের বাচ্চা । হাতীর পেটে যারা জন্ম নেয় তারা হাতীর বাচ্চা ।
শুধু মানুষের পেটে যারা জন্ম নেয় তারা মানুষের বাচ্চা নয় । তারা কেউ হিন্দুর বাচ্চা , কেউ মুসলিমের বাচ্চা বা কেউ খ্রীঃ বাচ্চা ।

তাহলে আমরা কবে থেকে নিজেদের দাবি করব “আমরা মানুষের বাচ্চা ?”

-নাস্তিকদেব

পরকালবাদ

ধর্ম অপরাধ থামাতে পারেনি , মানুষকে মানুষ বানাতে পারেনি , শোষণ মুক্ত সমাজ গড়তে পারেনি , বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা দিতে পারেনি , শুধু পরকালের সন্ধান দিয়েছে । কিন্তু তা আদোও আছে কি না কেউ শিওর দিতে পারে নি । শুধুই বিশ্বাসের উপর মেনে নিয়েছে পরকালবাদ ।

বিশ্বাস জ্ঞানের মৃত অংশ ।

      - নাস্তিক দেব

বৃহস্পতিবার, জানুয়ারী ২৫

মেঘালয় বিষণ্ণ

আজ রাতে
আমি একটি
সর্বাধিক বিষণ্ণের কবিতা লিখব ।

দৃষ্টান্ত , রাতের নক্ষত্রপূর্ণ
তারা নীল দূরাকাশে কাঁপে ।

রাতের আকাশ গানে
বাতাসের মীড় গান্ধারে পৌঁছায় ।

আমি আজ
একটি সর্বাধিক দুঃখের কবিতা লিখছি

আমি তারে ভীষণ ভালবাসি
মাঝে মাঝে সেও-
আমাকে নীল হয়ে ভালবাসে ।

রাতের মত ।
রক্তাক্ত অস্ত্রের মত ।
অসীম আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে
আমাকে চুমু দেয় ভেলভেট ঠোঁটে

অপরিচিত রাত
যখন আমার পাশে এসে বসে
নিহত হৃদপিণ্ড উপহার দিতে
আমি দু হাত বাড়িয়ে বুকে তুলে নেই ,

তোমার কত রকম পরিচিতি
আমার কবিতা মস্তিস্ক-কে
কুয়াশা ধোঁয়া হয়ে
ঘাসে ঘাসে শূলবিদ্ধে শিশিরে জমে ।

বুধবার, জানুয়ারী ২৪

আমরা মানুষ

কোন মানুষ-কে কুত্তার বাচ্চা বললে সে ক্ষেপে যায়
গাধার বাচ্চা বললেও সে ক্ষেপে যাবে
আবার , কেউ যদি বলে হিন্দু বা মুসলিমের বাচ্চা তাতেও তাঁরা ক্ষেপে যায় ।

কারণটা কি জানেন ? আসলে , আমরা তো সবাই মানুষের বাচ্চা ।
অজান্তে , আড়ালে ও মনের অগোচরেই আমরা স্বীকার ক’রে নেয় “ আমরা মানুষের বাচ্চা ।”

আমরা মানুষের বাচ্চা

কুকুরের পেটে যারা জন্ম নেয় তারা কুকুরের বাচ্চা । হাতীর পেটে যারা জন্ম নেয় তারা হাতীর বাচ্চা ।
শুধু মানুষের পেটে যারা জন্ম নেয় তারা মানুষের বাচ্চা নয় । তারা কেউ হিন্দুর বাচ্চা , কেউ মুসলিমের বাচ্চা বা কেউ খ্রীঃ বাচ্চা ।

তাহলে আমরা কবে থেকে নিজেদের দাবি করব “আমরা মানুষের বাচ্চা ?”

বৃহস্পতিবার, জানুয়ারী ১৮

কবি সাহিত্যিকদের নাম


অক্ষয় কুমার দত্ত  
অক্ষয় কুমার বড়াল
অক্ষয় চন্দ্র সরকার
অক্ষয় চন্দ্র চৌধূরী
অচিন্ত কুমার সেনগুপ্ত
অক্ষয় রায়
অজিত ঘোষ
অজিত রায়
অজিত দত্ত
অজিতেশ রায়
অজিত কুমার গ্রহ
অজিত কুমার চক্রবর্তী
অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়
অতুল প্রসাধ সেন
অতুল চন্দ্র গুপ্ত
অদ্বৈত মল্ল বর্মন
অন্তত পৃথ্বীরাজ
অনু ইসলাম
অনার্য নাঈম
অনিক খান
অনিক শুভ
অনিকেত শামীম
অতনু দত্ত
অনিতা অগ্নিহোত্রী
অনিল মুখার্জি
অনির্বাণ
অনির্বাণ মন্ডল
অনিরুদ্ধ আলম
অনুবিন্দু লতিফুর রহমান
অনুরূপা দেবী
অন্নদাশঙ্কর রায়
অন্নদাচরণ খাস্তগীর
অনন্য বন্দ্যোপাধ্যায়
অপর্ণা পাল ( দেবী )
অপূর্ব কুমার শীল
অপূর্ব আহমেদ জুয়েল
অবধূত
অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
অভিজিৎ তরফদার
অভিজিৎ দাশ
অভিলাষ মাহমুদ
অমরজিৎ মন্ডল
অমর মিত্র
অমলেন্দু দে
অমিতাভ ঘোষ
অমিতাভ দাশগুপ্ত
অমিতাভ মীর
অমূল্যকুমার দাশ দু উ
অমিয় চক্রবর্তী
অমিয় চৌধূরী
অমিয় মল্লিক
অমিয় ভূষণ মজুমদার
অমৃত লাল বসু
অমর্ত্য আতিক
অমর্ত্য সেন
অর্ক
অর্ণব আশিক
অর্ণব সুমন
অর্পিতা সরকার
অরুণ মিত্র
অরুণ রায়
অরুণ কুমার মিত্র
অরূপ গোস্বামী
অরূপরতন ভট্টাচার্য
অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত
অশোক মিত্র
অসিত কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
অসীম ঘোষাল
অসীম কুমার মন্ডল
অসীম তরফদার
অসীম সাহা
অয়ন ইমরুল


আউয়াল আনোয়ার
আকতার হোসাইন
আকরাম হোসেন রানা
আকলিমা আঁখি
আকিব শিকদার
আকিদুল ইসলাম সাদী


ইউনুস সামাদ
ইউনুছ ফারাবী
ইউসুফ আউলিয়া
ইসমাইল হোসেন সিরাজী


ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর


উজ্জ্বল সর্দার আর্য
উত্তম কুমার নাথ
উবাইদুল হক খান
উম্মে রুমেনা ইসলাম


ঋতুরাজ ফিরোজ


এ আর আলম
এ আর আহম্মেদ সুজন
এইচ আই হামিদ


ঐন্দ্রিলা মহিন্তা


ওবাইদুল কবির
ওমর আলী



কমলকুমার মজুমদার
করুণানিধান বন্দ্যোপাধ্যায়
কাজী ইমদাদুল হক
কাজী কাদের নেওয়াজ
কাজী নজরুল ইসলাম
কাজী মোতাহার হোসেন
কামাল চৌধুরী
কামিনী রায়
কালকূট
কালিচন্দ্র রায় চৌধুরী
কালিদাস রায়
কালীনাথ দত্ত
কালীপ্রসন্ন সিংহ
কাহ্নপা
কায়কোবাদ
কুমুদরঞ্জন মল্লিক
কোরেশী মাগন ঠাকুর
কৃত্তিবাস ওঝা
কৃষ্ণদয়াল বসু
কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়
ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ



খান মোহাম্মদ ফারাবী
খেলারাম চক্রবর্তী




গগন হরকরা
গিরিশচন্দ্র ঘোষ
গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী
গোবিন্দচন্দ্র দাস
গোলাম মোস্তফা
গোলাম মোহাম্মদ
গৌড় অভিনন্দ



ঘনরাম চক্রবর্তী


চন্দ্রাবতী
চণ্ডীদাস
চণ্ডীচরণ মুনশী
চিত্তরঞ্জন মাইতি




জগদীশ গুপ্ত
জসীম উদ্দীন
জহির রায়হান
জয়দেব
জয় গোস্বামী
জয়েন উদ্দীন
জাহানারা ইমাম
জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী
জীবনানন্দ দাশ
জ্ঞান দাস
জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর




তনিকা সরকার
তপন চক্রবর্তী
তপন বন্দ্যোপাধ্যায়
তপন রায়চৌধুরী
তরু দত্ত
তসলিমা নাসরিন
তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়
তারকমোহন দাশ
তারাপদ রায়
তারাপদ সাঁতরা
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
তাহমিমা আনাম
তিলোত্তমা মজুমদার
ত্রিদিব দস্তিদার
ত্রিদিব মিত্র



দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার
দাদ আলী
দানেশ পন্ডিত
দিদারুল আলম
দিব্যেন্দু পালিত
দিলওয়ার
দীনেশ দাশ
দীনেশচন্দ্র সেন
দীনেশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
দীনেশচন্দ্র ভট্টাচার্য [১৯৫৩ রবীন্দ্র পুরস্কার]
দুদ্দু শাহ
দুলেন্দ্র ভৌমিক
দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়
দেবী রায়
দেবেশ রায়
দেবেন্দ্রনাথ সেন
দেওয়ান গোলাম মোর্তাজা
দৌলত উজির বাহরাম খান
দৌলত কাজী
দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ
দ্বিজ বংশী দাস
দ্বিজেন শর্মা
দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর
দ্বিজেন্দ্রলাল রায়




নবারুণ ভট্টাচার্য
নবীনচন্দ্র সেন
নরেন্দ্র দেব
নসরুল্লাহ খাঁ
নারায়ণ দেব
নারায়ণ সান্যাল
নাসরীন জাহান [৯]
নিমাই ভট্টাচার্য
নির্মলেন্দু গুণ
নিশিকান্ত রায় চৌধুরী
নীলমণি মুখোপাধ্যায় [১৯৭৬ রবীন্দ্র পুরস্কার]
নীহাররঞ্জন গুপ্ত
নীহাররঞ্জন রায়


প্রফুল্ল রায়
প্রেমেন্দ্র মিত্র




বুধবার, জানুয়ারী ১৭

শীত শিল্প

শীত শিল্প
দেবজ্যোতিকাজল

শীতকালীন সূর্য ফুটে হিমশীতল ভোরে
তৃষ্ণার্ত রোদ খোঁজে উষ্ণ চাদর মুড়ে

ব্যস্ত সূর্যের সময় নেই
আসতে আমার উঠোনে
পাহাড় দেশে , মেঘাড়ালে
কি করে কে জানে

চারিদিকে ঠাণ্ডা বাতাস বুকের শ্বাস মরে
স্যাঁতস্যাঁতে দেহ নিয়ে ভেঙে পড়ি ঝড়ে

আমার নরম চামড়া
আসাড় হয় মেঘ বেদনায়
লুকিয়ে যায় কুয়াসায়-
আমি কোন আজনায়

জানলা ছাপিয়ে কুয়াসা ভাসে শিল্প ধোঁয়ায়
পুরো পৃথিবী অন্ধ হয়ে গেছে মৃত খরায়

সোমবার, জানুয়ারী ১৫

জীবন কাঠুরে

আমার গায়ের গন্ধে বিকেল নামে উষ্ণতায়
নামে তেজপাতা রঙের সন্ধ্যে ধূসর বিছানায়

আমায় ডাকছে শরীর ঝুঁকে
ঠাণ্ডা রাতের তলপেট থেকে

আমি আজ অসুস্থ , সবুজ ত্বকের জানলা বুকে
কবোষ্ণ শরীর উড়ে যায় চিতার আগুন শুঁকে ।

ঘুমায় চোখ রোদের ফাঁকে
ছেঁড়া বাতাস সম্পর্ক চুকে

আমি নিজেকে নিজে ডেকে পাই না সাড়া শেকড়ে
শীতের রাতে মরা শহর কেঁদে যায় জীবন কাঠুরে ।

রবিবার, জানুয়ারী ১৪

লেখার খাতা

মমতা বিকালের চোখে । তেজপাতা রঙে সন্ধ্যা নামে । রক্তের ভিতর প্রাচীন ঔষধি শেকড় । সবুজ ত্বকে ধূসর জানলা উঁকি ঝুকি দেয় শীত ।
বাতাসে ছেঁড়ে যায় রাজহাঁসের পালক । কবোষ্ণ শরীর উড়ে যায় চিতার আগুনে । সুরের রাতটা বেজায় ঠাণ্ডা । সকালের ফেরুওয়ালা শীত চুপিচুপি ঢুকে পড়ে পড়ার মোড়ে কুয়াসাগুচ্ছে । পৃথিবীর আনাচে-কানাচে বুনো উষ্ণতায় বরফ জমেছে । রোদের ফাঁকে শীতের তলপেট । শীত ঘুমে জেগে ওঠে ।

আমার গায়ের গন্ধে বিকেল নামে উষ্ণতায়
নামে তেজপাতা রঙের সন্ধ্যে ধূসর বিছানায়

আমায় ডাকছে শরীর ঝুকে
ঠাণ্ডা রাতে তলপেট থেকে

আমি আজ অসুস্থ , সবুজ ত্বকের জানলা ঝুঁকে
কবোষ্ণ শরীর উড়ে যায় চিতার আগুন শুঁকে ।

ঘুমায় চোখ রোদের ফাঁকে
ছেঁড়ে বাতাস সম্পর্ক চুকে

আমি নিজেকে নিজে ডাকে পাই না সাড়া শেকড়ে
শীতের রাতে মরা শহর বনান্তে যায়
জীবন কাঠুরে ।

...................…................................

আমি যদি লিখতে না পারি
আমার গৃহপালিত ভয়ানক অনুভূতি

আমি যদি না লিখি
আমার ভয়ঙ্কর অনুভূতি নিয়ে
তার মানে এই নয়-যে
লিখবো না আর দীর্ঘ সময়ে ।।

**********************************
এটি তার দোষ নয় , নয় তো দোষারোপ
ভয় থেকে স্বার্থপরে বেড়ে ওঠার রোগ

মায়ের আঁচলে রাত

মায়ের আঁচলে রাত
দেবজ্যোতিকাজল
( বাবার স্মরণে )

এই জানুয়ারীতে মা
তাঁর আঁচলে বেঁধেছিল রাত ।
দীর্ঘ সে রাত আঁচলকে করেছে স্থবির ,
এখন আরও..আরও গভীর স্থবিরে
একটা মিহি প্রান মিশে যায়
নিহত নক্ষত্রের দলে ।

আকাশ বাড়িয়ে দেয় হাত
মায়ের আঁচল থেকে রাতের
                           গন্ধ নিবে বলে

তাই , ভোরের সৌরমণ্ডলে -
উঠেনি আর কখনো অদৃষ্টের আবীর
আসেনি আর কখনো অলকগুচ্ছ দুপুর ।

এখন, এই বিকেলে আর রাত্রে
মায়ের শরীর সাদা জ্যোৎস্নায় ছোঁয়
জীর্ণ কাধ আঁচলের ভারে ঠাসাঠাসি
নুয়ে পড়ে নির্বেদ আর সান্ত্বনার ফসিল ।

এই জানুয়ারী
এখনও দাঁড়িয়ে স্মরণ পথিকবর
কুলিকের পাড় ধরে হেঁটে চলে
মায়ের বুক বরাবর বিষ-স্মৃতি ছড়িয়ে ।

আমি যাকে নদীর-পাড় বলি
আসলে সে-নদীর-পাড় ছিল বাবার সমাধি

আমি যাকে জলের-শব্দ বলি
আসলে সে-শব্দ ছিল দুঃখ-স্রোতের আর্তনাদ ।

°↑

ফিরে আসুক

এমন কোনো ছোটবেলা আবার আসুক
নতুন করে অবুঝ মন আবার সে মাতুক

ঘড়ির কাটায় সময় গেছে । অনেক কাল
বুড়ো নদীর বুকে ওড়ে । ছেঁড়া পাল ।

চোখের কাছে ছুটে যায় । সে-সব মৃত তারা
নস্টালজিয়া খোঁদাই করে । পাগলপারা ।

যখন আমি ছিলাম ছোট । রৌদ্রে হতেম চঞ্চল
নিজের ছায়ায় পেতাম ভয় । পড়ত চোখের পল ।

আমার মাথার মধ্যে উড়ন্ত ইমেজ । পাখির মত উড়ে
নেউটে মন স্বদেশটা-কে সাঁঝের তারায় ধরে ।

সেই পুরনো শান্ত ঘরে । এখনও বসে কোণায়
মধ্যে বয়সি জীর্ণ হাতে । স্বপ্নে গীটার বাজায় ।

শনিবার, জানুয়ারী ১৩

ইচ্ছা পুরণের ভাষা


ইচ্ছে পুরণের ভাষা
দেবজ্যোতিকাজল

ছোটবেলায় কাদা মাটি দিয়ে পিরামিড বানাতাম । পাড়ার এক দাদুর কাছে যেনেছিলাম পিরামিডে মরা মানুষ ভূত হয়ে বসবাস করে । আমি অবশ্য কখনই বিশ্বাস করতাম না ভূত-টূত বলে কিছু আছে । মানুষ কোনো এক কারণে মারা জান । পিরামিড বানাতে বানাতে ভাবতাম । আরও ভাবতাম বড় হলে আমি বিজ্ঞানী হব । মানুষ মারা গেলেই তাদের আমি বাঁচিয়ে তুলব । ওয়ান থেকে টু । টু থেকে থ্রী । আমার জীবনের পরিবর্তন ঘটতে লাগল । আমি যত বড় হতে লাগলাম । বিজ্ঞানী হবার ইচ্ছাটা ততই ভিতরে দানা বাঁধতে লাগল । ভাবতাম সারা পৃথিবীর একটি মানুষকেও আমি মরতে দেব না । আমি তখনও অবদি জানতাম না বিজ্ঞানী কি করে হতে হয় । আমি ভাবতাম এই কাদা মাটির পিরামিড বানাতে বানাতেই একদিন বিজ্ঞানী হয়ে যাব ।

আমি বড় হতে হতে একদিন জানলাম । বিজ্ঞানী হতে গেলে প্রচুর বই পড়তে হয় । আমার পাশের বাড়ির এক মাস্টামোশার বাড়ি গিয়ে দেখি । আলমারি ভর্তি বই । ইংরাজি ও বাংলায় লেখার প্রচুর বই ।

মাস্টামোশাইকে জীঞ্জেস করলাম , এটা কি বই ?

মাস্টামোশাই উত্তর দিলেন , এটা মানুষ কেমন করে পৃথিবীতে এলো সেই নিয়ে বই ।

বইটা হাতে নিয়ে দেখলাম ইংরাজিতে লেখা । মনে মনে ভাবলাম দুর আমি তো ইংরাজি পড়তেই পারি না । পাশের আলমারি থেকে আরও একটা বই বের করলাম । বইটা বাংলাতেই লেখা । কভার পেজে বড় বড় করে লেখা আছে শরৎ রচনা বলি । বইটা তাকে রেখে মাস্টামোশার দিকে তাকালাম । মাস্টামোশা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল , কি হয়েছে রে ? হঠাৎ বই-এর পিছনে কেন লাগলি ।

আমি করুণ আর নরম স্বরে বললাম , বিভিন্ন বিজ্ঞানীদের লেখা বই পড়ব ।

মাস্টামোশাই বলল, ওসব বই তো সব ইংরাজিতে লেখা ।

মনে মনে ভাবলাম । তবে কি হবে ! আমার বিজ্ঞানী হবার । আমি কি তবে পৃথিবীর সমস্ত মানুষকে বাঁচাতে পারব না ? না , আজও এতটা বড় হয়েও বিজ্ঞানী হতে পারিনি । বিজ্ঞান বিষয়ের বইগুলো যে সব ইংরাজিতে লেখা । আমার স্বপ্নের পিরামিড আর বিজ্ঞানী হবার লুপ্ত বাসনা আস্তে আস্তে ইচ্ছাদের ডানায় উড়ে নিরুদ্দেশ হতে লাগল । মানুষ মরে । প্রতিদিন মরে । হয়তো আমিও একদিন মরে যাব । তবুও আমার বিজ্ঞানী হওয়া হবে না । আমার মাতৃভাষায় আমি কাঁদি হাসি , খিদে পেলে মাকে বলি । বড় জোড় কাউকে খিস্তি দেওয়া যায় । কিন্তু বিজ্ঞান চর্চা করা যায় না ।

শুক্রবার, জানুয়ারী ১২

বুঝতে পারি না

উঠোন যদি মন হয় । রৌদ্র তুমি । সে একদিন
অনেক খরা গাছের বুকে । বৃষ্টি দিলে বাড়বে ঋণ ।
মেঘের চোখে ঘুম নেমেছে ।
জ্যোস্না মেখে গায় ।
গভীর রাতে জানলা কাঁদে ।
বাতাস ব’লে যায় ।

কার আঘাতে পাহাড় তুমি । ঝর্ণা নিয়ে মাথায়
কার প্রেমে জল হয়ে ছুটো । যাযাবরের কথায় ?

অন্তর্বাস ঈশ্বর

০.১

আমি ভাবতাম ,
আমি ঈশ্বর কে চিনি
তিনি বোধহয় সব ধর্মের ঈশ্বর ।

ঈশ্বর নাকি শুধু বসবাস করেন
নিখুঁত ভাবে বইয়েই
আমরা মানুষেরাই নাকি
তাঁর সৃষ্টির ঐতিহ্য ।

০.২

আমার ইচ্ছা ছিল ,
কাঁদব না ,
ঈশ্বর কে খুঁজে বের করতে ,

তিনি বললেন , অনুসন্ধানে রাখো ।
আমি বললাম , সঠিক সময়ে আপনার খোঁজ করব ।

০.৩

ঈশ্বর নিশ্চয়
একজন ঈর্ষান্বিত পুরুষ ।

মানুষের হৃদয়চোর । মিথ্যাবাদী
এক-একাক মানুষ-কে তিনি
এক-এক কথা বলেছেন ।

তিনি সৃষ্টিকে ভালবাসেন না
ভালবাসেন অনুশাসন-কে ।

তিনি মানুষকে ভালবাসেন না
ভালবাসেন ভয় দেখাতে ।

আমি এই ঈশ্বর কে চাই না
আমি চাই একটি দৃঢ় মেরুদণ্ড ,

আমি এই ঈশ্বর কে বিশ্বাস করি না
আমি চাই শক্ত-পক্ত আত্মবিশ্বাস ,

ঈশ্বর কখনই
আমার জগৎ পিতা হতে পারেন না
কেননা
তিনি চোখের বদলে চোখ নেন
পাপীকে শাস্তি দিয়ে , পাপ করেন ।

বৃহস্পতিবার, জানুয়ারী ১১

বাংলাদেশের জন্য ইন্দ্রাগান্ধী কে অপমান হতে হয়েছিল

৪ নভেম্বর ১৯৭১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী আমেরিকার  প্রেসিডেন্ট নিক্সনের সঙ্গে বৈঠক করেন।ওই বৈঠকে ইন্দিরা গান্ধী মন্তব্য করেন,এই বিশাল ট্র‍্যাজেডির বিষয়ে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ নিতান্তই নগন্য। নিক্সনের সঙ্গে বৈঠকে রাজনৈতিক সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।রাজনৈতিক সমাধান বলতে ইন্দিরা গান্ধী বোঝাতে চেয়েছেন বাংলাদেশের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তাস্তর এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তি।নিক্সন জোর দিয়ে বলেন,অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতি ও উভয় দেশের  সৈন্যদের সীমান্ত থেকে প্রত্যাহার করতে হবে।প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী পরিস্কার ভাবে বলেন,পুর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান একত্রে থাকার আর কোনো অবকাশ নেই।৫ নভেম্বর নিক্সন পাশের ঘরে কিসঞ্জারের সঙ্গে আলাপকালে বলেন,ওই বুড়ি ডাইনিকে আমরা মাত্রাতিরিক্ত প্রশ্রয় দিয়েছি এবং ইন্দিরা গান্ধী কে তিনি কুক্কুরী বলে গালাগালি করতে থাকেন।তিনি ইন্দিরা গান্ধী কে অবহেলা করার জন্য নির্ধারিত সময়ের ৪৫ মিনিট পর নিক্সন আলোচনায় বসেন।আলোচনা ভেঙ্গে যায়।ইন্দিরা গান্ধীকে সতর্ক করে নিক্সন বলেন,সামরিক ব্যবস্থা কারও  জন্য ভালো হবেনা। এর জবাবে ইন্দিরা গান্ধী বলেন,তিন--চার হাজার মাইল দূর থেকে শুধু বর্ণগৌরবে কোনো দেশ ভারতকে তাদের ইচ্ছামতো আদেশ দেওয়ার ক্ষমতার দিন শেষ হয়ে গেছে।
ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধু এবং বাঙালীর জন্য কী অবদান রেখেছেন, তা বলার অবকাশ রাখে না। আমরা গর্বিত এমন বন্ধু রাষ্ট্র আমাদের সাথে ছিল এবং আগামী তেও থাকবে।

আমার শরীর যখন ঈশ্বর নয়

আমার শরীর যখন ঈশ্বর নয়
দেবজ্যোতিকাজল
↓↑

আমার শরীর যখন ঈশ্বর নয়

তখন ,
প্রতিটি দৃঢ় চোখ থেকে গজাবে বৃক্ষ
যেখান থেকে বেরিয়ে আসবে ফল

বিশুদ্ধ বিশ্বের উপর নাচবে অরূণিত
আমার গান হবে আগুন ঠোঁটের গর্ভ

একটি গোলাপ , বাসন্তী হয়ে জন্মাবে
দ্বৈত যুগল করবে অনুভূতি অপচয়

বুকের কাছে শুয়ে থাকবে মানবতা
নির্মেঘ শক্ত আঙুলে হিম ফুল ফুটবে

উত্সাহী পাখির ভিতর ঈশ্বর মরবে
মমতা জন্ম নেবে মানুষের বুক ছুঁয়ে

মুখে মুখ ছুঁয়ে ডানা মেলে
আমার হৃদয় হবে সব সময় -
একটি তর্জণী বেলাবাসী...।

বুধবার, জানুয়ারী ১০

বাণী

“যে মানুষ নিজেকে আবিষ্কার করতে পারেনি, অথবা আবিষ্কার করেও হারিয়ে ফেলেছে – ধর্ম তাকেই টেনে নেয়” ...

(সানফ্রানজিৎস কাফকা)

মঙ্গলবার, জানুয়ারী ৯

বুকের কাছে রোদ

বুকের কাছে রোদ
দেবজ্যোতিকাজল

আগুনে গলে যায় পাখি
রৌদ্রের নীচে পড়ে ছায়া
মাটির কাছে নদীর কাছে
রেখে যায় দীর্ঘ দুঃখ-মায়া ।

এপাড়ে’র মেঘ ওপাড়ে যায়
সীমানা বুঝে না কার সে দেশ
খুঁজে এ মন পুরনো স্বপ্ন
ফেলা আসা যত রকম আবেশ ।

কে তুমি ফ্রেমবন্দি এক ঝাঁক
রৌদ্র আগুন পরশ । বলে যাও-
তুমি কোন আকাশের সুরহীন সূর্য
হারানো পুরনো আলো কেনো দাও ।

জানি , তুমি হারিয়ে ফেলছো আমায়
রাখনি চিহ্ন কাছে শব্দে কিম্বা রঙে
তবুআমি টের পায় তোমায় -
গভীর পথে হেঁটে, মায়ার রেলিঙে

ঝোড়ো শ্লোক

এক

অন্ধকারে আমি গা ভাসাব
অসম্ভব অসঙ্গতির বিরুদ্ধে
আমি আমার মাঠে দাঁড়াব
মাথা নত না করে নিজের মধ্যে

দুই

আমার মাথার মধ্যে ভরাট প্রান
মৃত্যুর অনুরূপ কিছু অগ্নিবাণ

তিন

আমি যদি না লিখি
আমার ভয়ঙ্কর অনুভূতি নিয়ে
তার মানে এই নয়-যে
লিখবো না আর দীর্ঘ সময়ে ।।

চার

এটি তার দোষ নয় , নয় তো দোষারোপ
ভয় থেকে স্বার্থপরে বেড়ে ওঠার রোগ

ঘূর্ণায়মান সমুদ্রে কম্পাসহীন ভেসে-চলা

ঘূর্ণায়মান সমুদ্রে কম্পাসহীন ভেসে-চলা
দেবজ্যোতিকাজল

আমি ক্লান্ত । নীজের পিছু ছুটে ছুটে
আমি হিংস্র রকম ক্লান্ত বোধ করছি ।

তবুও আমি যুদ্ধের মাঠে দাঁড়িয়ে
ক্লান্তির সঙ্গে যুদ্ধ করে চলি একটানা ,
চেষ্টাগুলো-
বোধহয় সব মিথ্যে হয়ে যায়
আমি কি-
তবে সত্যিই ঠিক আছি ?

আমি ঘুমাতে চাই
দিনের এক সমুদ্র রৌদ্রতেই

স্বপ্নগুলো
আমাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে
ভয় হয়
যদি খুঁজে না পায় !
তাই আমি ঘুমাতে চাই ..।

আমি কি জলের উপর ভাসছি
ডুবে যাওয়া মাতালের মত
একটি বিশাল সেতু হয়ে ?

স্মৃতি
অভিজ্ঞতা
আবেগ
দমন করা অধিক চাপ
সেতুর চেয়েও ভারি
চোখের পাতা আমায় টানছে
প্রথম পলক পড়া ঘুমে ;

স্রেফ নিজের জন্য যুদ্ধ ক'রে
অদৃশ্য স্রোতের মুখে চলি
যুদ্ধ থামাই রহস্যের ঘনত্বে
চোখ খুলে দেখি
আমি এক অভিশাপ্ত ক্লান্ত পথিক..

রবিবার, জানুয়ারী ৭

চুপি চুপি অনুপ

চুপি চুপি অনুপ
দেবজ্যোতিকাজল

আমার স্মৃতির নীচে বৃষ্টি পড়ে ।

অশ্রু প্লাবনে
ভালবাসা ঘোষণা দেয়
আমাকে প্রমান করো

আমি বললাম ,
আমি তোমার আবরণ ,
যখন
তুমি আমার আবরণ খোলো ।

শনিবার, জানুয়ারী ৬

বাবা-কে নিয়ে স্বপ্ন দেখা

বাবাকে নিয়ে
---------------------
দেবজ্যোতিকাজল

আজ ঘুম থেকে ওঠে সকালটা স্তব্ধ হয়ে গেলো । মনটা নুয়ে পড়ল শীতের স্যাঁতসেঁতে সকালে । ঠাণ্ডা প্রচণ্ড থাকায় সকাল দশটায় ঘুম থেকে উঠি ।  ঘরে মা নেই । সারা দিন-রাত একা একাই কাটাচ্ছি । একাই রান্না করছি । একাই খাচ্ছি । অবশ্য এইটি এই নতুন না । কাল রাত্রে ঘুম পাচ্ছিল না । কোন এক অদৃশ্য কারণেই ঘুম পাচ্ছিল না । এই ঘুম না পাওয়াটা আমার জীবনে অদ্ভূত কোন ঘটনা না । ষোলো বছর বয়স থেকে আজ অবদি বহুরাত্রি আমি জেগেছি । কখনও শারীরিক কারণে কখনও ব্যাক্তিগত কারণে । তাই এটা আমার জীবনের পরম বন্ধু । যখন অসুস্থ ছিলাম । তখন তো রোজ রাত্রি জাগতাম । মাঝে মাঝে অবশ্য ঘুমের ঔষধ খেয়ে ঘুমাতাম । তাই রাত্রি জাগাটা আমার জীবনের নতুন কিছু না । কাল রাত দুটোয় ফেসবুক থেকে বেরিয়ে ঘুমাবার চেষ্টা করলাম । এক সময় হাল্কা একটা ঘুমেও বিভোর হয়ে পড়লাম । তন্দ্রা ঘুমের মধ্যে বাবা এলো । বাবা মারা যাবার পর কখনও তাঁকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছি বলে মনে পড়ছে না । বলতে গেলে এই প্রথম বাবা কে নিয়ে স্বপ্ন দেখা । আমার বাবা ছিলেন একজন সৎজন মানুষ । আমি অনেক কাছে থেকে দেখেছি । তিনি কখনই অসৎ চিন্তা করতেন না । বাবা ব্যবসা ক্ষেত্রেও অতিসৎজন ব্যক্তি ছিলেন । তাঁর জীবন থেকে অনেক কিছু গ্রহন করার ছিল আমাদের । কিন্তু তেনার জীবনের প্রভাব আমাদের উপর কতটা পড়েছে বুঝতে পারি না ।

বেশি সম্ভব এই মাসটা বাবার মৃত্যু মাস । 1999 সালে বাবা মারা গেছেন । বাবার মৃত্যুর চেয়ে , বাবার মৃত্যুর পরিবেশটা ছিল অতি দুঃখ জনক । বাবাও হয়তো কখনও ভাবতে পারেননি । অন্যের বাড়িতে অস্বাস্থ্য পরিবেশে তেঁনাকে এভাবে চলে যেতে হবে । তবুও এটিই সত্য বাবার জীবনে । বাবা অসুস্থ হয়ে বিছায় পড়ে দেড় মাস বেঁচে ছিলেন । যাই হোক । কাল রাত্রে বাবার স্বপ্ন দেখেছি । স্বপ্নটা ছিল ছোটবেলার । আমি একদিন হাইস্কুলের পিছন মাঠ থেকে বল খেলে সন্ধ্যা গরিয়ে যাবার পর বাড়িতে ঢুকেছিলাম । কথাটা বাবা হাট থেকে এলে মা বলে দিয়েছিল । বাবা বাড়িতে ঢুকেই মাকে আগে জিজ্ঞেস করত , “আমরা স্কুলে গিয়েছিলাম কিনা ।” এটা বাবার দৈনন্দিন রুটিন ছিল যে , আমরা সারাদিন কি করলাম মায়ের কাছ থেকে তা জানতো । মাও বলে দিত । ঠিক সেই ভাবেই আজকের ঘটনাটাও মা বলে দেয় বাবাকে , আমি আজ রাত্রি করে বাড়িতে ঢুকেছি । আমাদের সময় এটা নিয়ম ছিল । সন্ধ্যে লাগার আগেই বাড়িতে ফিরতে হবে । যেখানেই থাক তুমি । তা না হলেই কপালে কুমদ জুতি জুটবে । বাবা হাট থেকে ফিরতে না ফিরতেই আমার বাড়ি ফেরার অভিযোগটা বাবার কানে তুলেছিলেন মা । বাবা হাত পা ধুয়ে ঘরে ঢুকে । টিফিন খেয়ে । বিছানায় বসে বাবা আমাকে ডাকল । আমি গুটিগুটি পায়ে গিয়ে মাথা নিচু করে বাবার সামনে দাঁড়ালাম । বাবার স্বভাব ভঙ্গিতে আমাকে জিজ্ঞেস করল , “ মা যা বলল ঠিক ?”

আমি মাথা হেলিয়ে বললাম “ ঠিক ”

বাবা বলল , “ আমার দিকে তাকা । মাথা নিচু করে আছিস কেনো । ”

আমি তবুও মাথা নিচু করে রইলাম । বাবা বলল , “ কেনো দেরি হলো বাড়িতে ঢুকতে । ”

আমি বললাম ,“ হাইস্কুলের পিছন মাঠে বল খেলে । সুবল মন্সীদের বাড়িতে গিয়েছিলাম । তাই বাড়িতে ফিরতে দেরি হলো । ”

বাবা সুবলকে চিনত বলে ও প্রসঙ্গে না গিয়ে ফুটবল খেলা নিয়ে প্রশ্ন করল , “ তুই মাঠের কোথায় খেলিস ? ”

আমি বললাম , “ গোলিতে ।”

বাবা বলল, “ বল আসলে কি ভাবে ধরতে হয় তুই জানিস ?  ”

আমি উত্তর না দিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম ।

আসলে কিভাবে গোলিকে বল ধরতে হয় বাবা তারই দুই চারটা টিপস আমাকে দিলেন । আমি তখন শিওর হলাম । আজকের মত বাঁচলাম । বাবা আমাকে খুব একটা মারত না । কর্তা বেঁচে থাকা কালীন আমাকে কেউই মারতে পারত না ।  কর্তা মানে বাবার মাকে আমরা কর্তা বলে ডাকতাম । কর্তা আমাকে ভীষণ ভালবাসতেন । আমি না কি যেদিন হই সেদিন রাত্রে কর্তা ঠাকুরদার স্বপ্ন দেখেছিল । আমি নাকি ঠাকুর দা হয়েই জন্মেছি । এই কারণেই কর্তা আমাকে ভীষণ ভালবাসতেন । রাত্রে কর্তার সাথেই ঘুমাতাম । খেতামও কর্তার সাথে । কর্তা যখন মারা যায় তখন আমি প্রাইমারি স্কুলে পড়ি । কিন্তু যত বড় হয়েছি । ততই কর্তাকে মিস করেছি ।   তারপর আমিও আমার জীবন থেকে এগুতে পারিনি । হঠাৎ করে আমার জীবনেও একটা বিপর্যয় নেমে এলো ।   কেননা তার কয়েক বছর পর পরই আমিও অসুস্থ্য হয়ে বিছানাকে সঙ্গী করি । ঘটনাটা ঘটলো জৈষ্ঠ মাসে । ঠিক কেল্লাপুষির মেলের কয়েক দিন আগে । ইংলিশের 1984 সালে ।

আজ অনেক দিন পর স্বপ্নে এই ঘটনাগুলোই দেখলাম । বাবা আমাকে ফুলবল খেলার টিপস দিচ্ছেন । কিন্তু বাবা তো চলে যাওয়ার আগে জানত । তার ছেলে হাটতে দৌড়াতে পারে না । তবুও কেনো এমন স্বপ্ন দেখলাম ।  পরে জেনেছি বাবাও না কি ভাল বল খেলতেন ।