লেখার ডাগর মাঠ


বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৪

জীবাশ্মের দিন রাত্রি


আমি আকাশের সাথে বন্ধুত্ব করতে গিয়ে
সফেদ একটুকর মেঘ স্পর্শে
প্রত্নরোদে পোড়া বালি হয়ে গেলাম ।
কাঠ খোট্টা ডালে বসে থাকা
কাকের মেনুয়াল চিৎকার
আমার জাতিশ্ম মন ক্যান্ভাসে ক্যানভাসে
কে যেন কিছু আড়াল করে গেল , মনে হল ;
:
মনে হল , বৃদ্ধ বেলায়
শঙ্খ চিলের কথা
কল্পনার নস্টালজিয়া তখন
আমাকে উঁকি দেয় কূপের বৃত্তজলে ।
আমি তখন বলয়ের মত-
আমাকে দেখি । আড়াল মুখ
থুবড়ে গিয়ে দিন-রাত্রি-
আমার সামাজিক মনু সংহিতায় ।
জীবাশ্ম ভালবাসার উদ্বেল গণিতকুষ্ঠ ।

সোমবার, মার্চ ২১

হে বসন্ত, ফিরিয়ে দাও নিয়েছ যতটা


বেদনাটা বুকের বোঝা , একলা বয়ে বেড়ায়
নিরুপায় নির্জন পথে একলা , জনপদ শূন্য
হাঁপিয়ে উঠেছে একলা জীবন , গভীর দু'কুলে ।
অপ্রস্তুত সুরঙ্গে ঢুকে পড়ে জলভরা মেঘ
শরীর ছুঁয়ে , দমচাপা হানাদেয় কান্না ।
তবুও বসন্ত আসে-যায় ।।
কত দহন , নিগূঢ় ছায়া
চড়ুয়ের মত ফুরুৎ , শীর্ণ মায়া ।
হে বসন্ত উঁকি দিয়ে যাও ।

আমার প্রত্যেক প্রত্যাশা একলা হেঁটে চলে
স্তব্ধবাক্ সরীসৃপের মত । নদী
হিজিবিজি পথ , ভুল শব্দ
নির্জনে বসে ক্ষয়িষ্ণু সাধকে
তোমার স্তব করি হে বসন্ত
ফিরিয়ে দাও যতটা নিয়েছ ।

গোপন হয়ে আছে সব গল্প
অন্যপিঠে জানা হবেনা আর তোমার গল্প
তবুও অতর্কিতে দরজা-জনলা খুলে রাখি
সাহসের কালশিটেয় আঙুল ছুঁয়ে স্বপ্নে ।
বসন্ত এসে গেছে , উষ্ণ মুঠোয়
ফিরিয়ে নাও দমবন্ধ শিসমহল
অন্ধকার মিথ্যে হয়ে যাক
বেঁচে থাকতে যতটুকু লাগে ।

বৃহস্পতিবার, মার্চ ১৭

একুশ তোমায় ভুলিনি

একুশ তোমায় ভুলিনি ।

দোয়েল , ফিঙে আর শালিকের- সরস টুইটারে”
তোমায় ভুলিনি ” ।

একুশ তোমায় ভুলিনি ।
প্রবাসী সূর্যের প্রত্নরৌদ্দুরে দাঁড়িয়ে কল্পনার ‘প্রভাত ফেরিতে’
তোমায় ভুলিনি ,
তোমার ভুলতে কি পারি ?

তুমি যে বাহান্নের প্রবাল সঙ্গীমেয়ের রক্তকরবী
আমার অজন্মা শিশুর মুখের বুলি
কবির মাথার বিশৃঙ্খলা চুল
সাগর পাড়ের হোঁচট সূর্য ,
হামাগুড়ি ঢেউ ।
::
শহীদ ফেব্রুয়ারীর , ভাষা ফিনকীর রক্ত
একুশ তুমি একাশের সূর্য-তোরণ ভেসে যাওয়া মেঘ ফাল্গুন
আবির হোলির প্রভাত দিবস
একুশ তুমি আরও অনেক কিছু
স্বজন হারান নোনা জল
সহস্র মায়ের বিজয়ী কান্না
ফিরে তাকানো গানের কলি
কালোমেয়ের মেঘাল্পনা
যুবকের উদাস স্বপ্ন, যুবতীর সরল হাসি ;

ঝড়ের রাতের স্তব্ধ ভাষা
একুশ তুমি বাঙালীর চমক চুমু রবি ঠাকুরের লালমাটি-
শান্তিনিকেতন
নজরুলের কারারুদ্ধ
জসীমুদ্দিনের নক্সিকাঁথা
জীবনানন্দ দাসের বনলতা
একুশ তুমি প্রতিবাদি-
নতূন সর্য্যের আয়ুষ্কাল
একুশ তোমায় কখনও ভুলব না কসম ।
:::

তুমি আমার একুশ বুকের স্মৃতি থেমে য়াওয়া পায়ের পুনশ্চ আত্মপ্রেরণার প্রেত মুর্তি
তুমি আমার গানের স্বরলিপি কবিতার গোধূলীধূসর
নিবারণের ছায়াতৃষ্ণ
স্বপ্ন শরতের চাঁদোয়া
প্রবাসি চোখের করতোয়াশ্রু ।

একুশ তোমায় ভুলিনি
গন্ধ অরনণ্যে মিহী বাতাসে নিশ্বাসে প্রশ্বাসে , বাঙালী শ্বাসে তোমায় ভুলিনি । ভুলব না ।

প্রেম প্রেম আকাশ মেঘ

একটি রাত একটি চাঁদ
একটি আকাশ অসংখ্য তারা
একটি সকাল বিষণ্ণ আলো
একটি অরণ্য লক্ষবছরের বাসস্থান
:
যদি একটির পরে দু’টি না হতো
তবে একটি ভালবাসা
ধূলোয় লুটিয়ে ঝড় দিত
:
একটি দেখা তোমার চোখ
একটি নিঃশ্বাস একটি প্রান
একটি ইমন তোমার আলাপণ
একটি হাসি ঘুম জাগানো গান
:
একটি একটি করে অনেক সে একটি
গল্প লিখি কাব্য লিখি
বুকের সোহাগ মুঠোয় রাখি
:
তোমার চুম্বন আমার চুম্বন
আমার কষ্ট তোমার পরাজয়
একটি স্বপ্ন তোমার জন্য
একটি মিলন কথা রাখলে হয়
:
তোমারও একটি আমারও একটি
রজস্বলা বাতাসে ভেসে বেড়ায়
ফোঁটা ফোঁটা মৃত্যু ভায়লিন
সেসব দিন বিদ্রুপে হারায় …

তুমি না-কি জঙ্গী

সকালের চা, বিকেলের আদা-মুড়ি ।
বিষাদ বাতাস শুক্নলঙ্কা ঝালিয়ে দেয়
বিষ্টিতে বন্যার গান ভেজা উত্তাপ
জঙ্গি মুক্তিযোদ্ধারা খোঁজে বেড়ায়
::
গঙ্গা ফড়িং উড়ে আলো ঠিকরে
বেমাক্কা হাত কাঁচের মত, হয় নরম
ক্ষুধা কামড়ায়, দু’পেগেই হেভী নেশা।
জঙ্গি ছোকরাটা গরম হয়ে দাঁড়ায়।
:::
ভয় ভয় নেশা চোখ ছিঁড়ে পড়ে
তুমি কিসের মহৎ শালা, জমাট বিস্ফোরক-
জ্বলে, নিরুদ্দেশে তোমার বন্ধুর বুকে
পিঁপড়ের ডিম, কত জানোয়ারের খাবার খায়
এই দেশেরই বেহাল লোকে,
আর, তুমি না-কি জঙ্গি।

একমুঠো হৃদপিণ্ড

আমার পিঠে বালিকার বুকের চিহ্ন
চোখে চুম্বন ঠোঁট
ভালবাসা প্রাচীন উল্কার মত
বায়ু শূন্য সীমানা ঘেসে ।
:
সাঁতারু আশাগুলো
সাঝ রাতে ঝাঁক বেঁধে সপ্তর্ষি
শুকতারাকে ছুঁয়ে দীপ্তমান
ভাতঘুম স্বপ্ন ছায়া সারারাত ।
:
ভালবাসা প্রেম পেলে
জ্বলতে জ্বলতে সূর্যপোড়া ছাই
ঢিবির মত বাল্মীকি
একমুঠো হৃদপিণ্ড প্রেমময় ।