লেখার ডাগর মাঠ


বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ২৮

হার-জিৎ

মানুষ কত ভাবে হেরে যায়
কখনও চেষ্টায়
কখনও অবহেলায়

হেরে যাওয়া মানে লজ্জা নয়
হেরে যাওয়া মানে
সব শেষ হয়ে যাওয়া নয় ।

হেরে যেতে যেতে-
একদিন হার-জিতের
খেলা শেখা যায়
হেরে যেতে যেতে
একদিন হাতে কাছে
খুঁজে পাওয়া যায় মৃত্যু দিন ।

মীনা কুমারি

একবার মীনা কুমারী লিখেছিলেন, “যখন ধর্মের নামে আমাকে আমার শরীর কোনও পরপুরুষকে দিতে হয়, তখন আমার আর বেশ্যার মধ্যে কি পার্থক্য?” তিন তালাকের ঘটনা মীনা কুমারীকে ভিতর থেকে দুর্বল করে দিয়েছিল৷ মানসিক শান্তির জন্য তিনি তখন থেকে অ্যালকোহলে আসক্ত হয়ে পড়েন৷ আসক্তিতে কোনওভাবেই লাগাম পড়াতে পারেননি তিনি৷ অতিরিক্ত মাদক সেবনের জন্য অকালে মারা যান৷ তখন তাঁর বয়স মাত্র ৩৯ বছর৷ দিনটা ছিল ১৯৭২ সালের ৩১ মার্চ৷

জীবনের অন্ধকারে

#কাজল

ইটের ফাঁকে অলৌকিক এক চিলতে অন্ধকার । জ্বলজ্বল করছে একজোড়া চোখ । শ্যাওলায় সবুজ গুটি ,পোকাদের আড্ডা । আমি অনুসন্ধানে গন্ধ নেবার ভাব করি । দুপুরের রোদ আর হাড় কাঁপানো ছায়ারা আমাকে বুদ্ধিনাশ করে তুলে । তবুও আমি স্বপ্নে বিভোর । স্বপ্ন আমাকে অনাবরত ঘুম ভাঙায় । ভোর রাতের ভৈরবি শুনায় । রাত শেষে যখন ভোরের ট্রেন প্লাটফর্মে আসে । তখন দূরে ট্রেন হুইসিল বাজিয়ে জানান দেয় পুপু... শব্দে ।  হয় তো ফিরতি ট্রেন  । দুর্ ,ট্রেনের আবার ফিরতি আছে নাকি ! ট্রেনেরা শুধুই চলে ।  কত যুগ যে ট্রেনে উঠিনি কে জানে । মামার বাড়ির ভিটে দেখতে যেতে সেই শেষ ট্রেন যাত্রা । তারপর অনের বেলা গড়িয়ে গেল । প্রতিদিন আসে , প্রতিদিন যায় । আর , আমার ভাবনারা পথে দাঁড়িয়ে আসা-যাওয়া গুনে যায় । আমি থেমে গেছি পথেরা তা জেনে গেছে ।  ভেবেছিলাম আর একবার ট্রেনে ওঠবো । কিন্তু  তা আর হবে না যে , বেশ বুঝতে পারছি । হুম । সত্যি বোধহয় আর হবে না । ট্রেনে যাবার মত কোন আত্বীয় বাড়ি আর নেই যে ট্রেনে উঠতে হবে ।  যাহ! পোকাটা আর নেই ইটের ফাঁকে । ইটের ফাঁকে অন্ধকার আরও গভীর নীল হয়ে গেল । আমার অনুসন্ধানী চোখ জীবনের মানে খুঁজছিল । অধ্যায় খুঁজছিল ।

বুধবার, ডিসেম্বর ২৭

আসুন যুক্তি দিয়ে যুদ্ধ করি

মনে করুণ দুটো মানুষ । একটা মানুষ বাঘ দেখে ভয় পায় আর একটা মানুষ ভয় পায় না ।
এখন যে মানুষটি ভয় পায় না সে যদি বাঘের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় আর কোন ভাবে ভীত মানুষটা দেখে ফেলে তখন তার কি করা উচিৎ ?  নিশ্চয় সে ভাববে কি করে এতবড় ক্ষমতা তিনি অর্জন করলেন ।

একদল মানুষ ঈশ্বর কে দেখে ভয় পায় আর এক দল মানুষ ভয় পায় না । ভয় না পাওয়া মানুষটি যদি ঈশ্বর কে নিয়ে কোন কুৎসিৎ দুঃসাহসিক কাজ করে দিব্যি ভাল থাকেন । আর সেই কর্মটি যদি ভীতু মানুষটি দেখেন । তার কি করা উচিৎ । তেড়ে মারতে আসা না সেখান থেকে জ্ঞান অর্জন করা ?

ভীতু লোকটি ভাবতে পারত । আরে আমি যাকে বিশ্বাস করে এত ভয় পায় কিন্তু সাহসি লোকটি ঈশ্বর কে নিয়ে কিনা কুৎসিৎ কাণ্ডটাই ঘটিয়ে দেখালো । কিন্তু এত কাণ্ডের পরও তার কিছু হলো না । দিব্যি তিনি সুস্থ আছেন । এটাই হওয়ার কথা একজন জ্ঞানী মানুষের কাছে । কিন্তু তা না হয়ে ধর্ম অনুভূতি নামে একটা বিটকেল শব্দ সৃষ্টি করে সত্যকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে । সত্য যদি চিরন্তন সত্য হয় তবে আপনাদের হার নিশ্চিত । পৃথিবীতে নাস্তিকদের সংখ্যা হুহু করে বাড়ছে । 111 কোটি নাস্তিক থেকে এখন 125 কোটি নাস্তিক হয়েছে । এই ঈশ্বর না মানা 125 কোটি মানুষ দিব্যি সুস্থ ও বৈভব নিয়ে বেঁচে আছেন । আপনার ঈশ্বরের ক্ষমতা নেই এই নাস্তিকগুলোকে আস্তিক বানানোর । কিন্তু আপনার ঈশ্বর দাবি করেন তিনি নাকি “ সর্বশক্তিমান ’’।

ঈশ্বর ও মানুষ

ঈশ্বর বলেছিল , “আমার অসীম ক্ষমতা”

কে জানত
এই সত্যটা মানুষ জেনে যাবে ,
তাই মানুষ বলল,“ জনগণের শক্তি ঈশ্বরের শক্তি । ”

ঈশ্বর বলেছিল, “ তুমি অন্যায় কর । ক্ষতি নেই । আমি তোমাকে শাস্তি দেব ।”

কে জানত
এই সত্যটাও মানুষ জেনে যাবে '
তাই মানুষ বলল ,“ ঈশ্বরের কাছে তোমার অন্যায় স্বীকার করে প্রার্থনা কর । তোমার সমস্ত অন্যায় মাপ হয়ে যাবে ।”

ঈশ্বর আর এই মানুষের মধ্যেকার খেলায়
মানুষ হয়ে গেল জুয়ারু ।

ঈশ্বর একদিন মানুষের হাতে ধর্মগ্রন্থ
তুলে দিয়ে বললো,“ চোখ বন্ধ করে আমাকে ভাবো ।”

কিন্তু সেই মানুষটি -
যখন চোখ খুলল । দেখল-তাদের-
সম্পদ ঈশ্বরের দখলে চলে গেছে...।

মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ২৬

মরণ

মরণ
দেবজ্যোতিকাজল

আর উঁকি দেয় না মরণ ।

জুতোর মধ্যে মোজার মত
লুকিয়ে থাকে ধুকপুক

আমি ছদ্মবেশি মরণ ,
অনেক আগেই যে দেহ
জীবনকে দিয়েছে তর্পন ।

আমি আছি
মায়ের আঁচলে আধুলি হয়ে বাঁধা
আমি আছি
সমাজের আড়ালে নুলো অক্সিজেনে

আমার দেহে-
আর উঁকি দেয় না মরণ ,
দীঘল চোখের মত ছলনায় হাসে
মরণের নাকে –
আমি খোদাই ক’রা নিঃশ্বাস নথ ;
আর !
এই আসা যাওয়া !
দরজায় ঝুলে থাকা শিকল
কখন তাতে তালা পড়বে
কে জানে ।

আমার সদর দরজা খোলা আছে
জন্মান্তরবাদের গীতার প্রচ্ছদে
আঠারো দিনে পাল্টে গেলো
জ্ঞাতীর অপমৃত্যুর ইতিহাস ।
বিধবাদের সিঁদুরে তাই-
আমি দেখতে পাই অর্জুনের মুখ
অর্জুনের তীরের ফালায়
আমি হয়েছি
যুদ্ধ জয়ের রক্তাক্ত বাণ....।

শুক্রবার, ডিসেম্বর ২২

এখন

এখন
তোমার চোখ
নিখুঁত নীল সমুদ্র স্তব্ধ
অন্য দিনে-
সে ঝোড়ো ধূসর জল ভাঙা ঢেউ ।

তাই
তুমি আজ থেকে যাও গোপনে
আমার নুয়ে পরা বিষাদ ডালে ।

আমি এক পাঁজর হিংস্র মেঘ
সাজিয়ে রেখেছি বুকের আলমারিতে

আমি এক চোখ তরুণ বসন্ত
ঝুলিয়ে রেখেছি বাতাসের ক্যালেণ্ডারে

আমার পথ
পথিক হয়েছে পাথর পথে
ছুটে সর্বসান্তে
তোমার পিছু পিছু ভিড় ঠেলে ,

বৃদ্ধ অন্ধকার দাঁড়িয়েছে রূপক দূরে
স্যাঁতস্যাতে আলোর গায়ে
                              জলন্ত আকাশ
        গড়-গড়িয়ে আসে বজ্রধ্বনিতে ।

আমি প্রাচীন ফ্ল্যাশে । তোমাকে -
শুধু মাত্র দেখি একবার নিমিষে

তখন আমি নিজের সমুদ্র স্রোতে
সবুজ দানব ঢেউয়ে লুকিয়ে পড়ি
                   তোমারই স্তব্ধ সমুদ্র ।

শীতল ক্রিসমাস গান

হে সকালের আকাশ
তুমি আজ
অসীম নীলে এক থালা হালকা পিঙ্ক ।

তুমি আমাকে তার সম্পর্কে বলো,
তাঁর ভালবাসা , নতুন অনুকংপা
এই শীতল ক্রিসমাস আনন্দ পর্বে ;

আমি শুনব । তুমি এমন ভাবে বলো,
যেনো আমার হৃদয়টা
তাঁর পিছু পিছু ছুটে চলে ।

হে নরম বাতাস
আমার চোখে , মুখে ঝাপটা দাও
তোমার রহস্যময় করুণায় ,

আমার ভিতরে পৌঁছে দাও
তাঁর প্রেম ও গুচ্ছ আলিঙ্গন
বিশুদ্ধতায় এঁকে দাও চুম্বন ।

হে ক্রিসমাস কুয়াশা
ভোরের আলোর পাশাপাশি
তোমার ফিসফাস অক্লান্ত কন্ঠে ঝড়ুক
সহিষ্ণুতার গোপন কবিতা বাণী ,

গান গেয়ে ওঠো
গা ছম ছমে অনুনাদে ...
“ লুজ অল অফ ইউ ইন হিম ”

বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ২১

এখনও স্মৃতিগুলো আশেপাশে ঘুরে বেড়ায়

এখনও স্মৃতিগুলো
আশেপাশে ঘুরে বেড়ায়
দেবজ্যোতিকাজল

সকালটা ছিল
আমার নিয়ম বরাবর চমকে ওঠা জানলা
জানলার ফাঁকে সমস্ত পৃথিবী আমার চোখ ।
তাপ-উত্তাপের যন্ত্রণা বালিশে ঘুমায় ।
চমকে ওঠা চোখের চারপাশের আকাশে
                         অসংখ্য উষ্ণতা-
নুয়ে আছে কাছের নক্ষত্রের মত জ্বলে

রৌদ্রে লুকায় সে সব উষ্ণতা । কখনও-
দরজার ভাঁজে, খাটের নীচে, টুক্কি দেয় ।

ছোটবেলাগুলো
বাতাসে ভিজে ওঠা স্পর্শ ত্বক
কার আঙুল আলতু শিহরণ জাগায়
দত্তপাড়ার অলিগলিতে, ঘাটের পথে ।
কে যেনো ডেকে নিয়ে যায়
হারিয়ে ফেলা খেয়াঘাটের বাঁশের সাঁকোয় ।

ফিরবে না আর কখনও , এ দেহ
শাখা নদীর স্রোতে করতোয়ার টানে
ফিরবে না আর কখনও , এ পা
চেনা শহরের প্রবেশ দ্বারে মনের ভুলে
ফিরবে না আর কখনও , এ মন
ঘোষপাড়া , তাম্বুলীপাড়া
গোস্বাই দাদুর হাওয়া খানার দুপুরে,
শীতলি তলার বটের মূলে খেলার ছলে ।

প্রতিদিন সকাল আসে
চলে যায় বিকেল অন্ধকার পথ ধরে
সূর্যের এই আসা-যাওয়ার জন্মান্তবাদ
আমার ত্বকে উষ্ণ আগুন জমিয়ে
                                 রেখে যায় ।

সপসপে স্মৃতির কান্নাগুলো
                        সর্যাস্তে শুকোয় ।

এখন আর নেই
চিরতরে হারিয়েছে স্মৃতির স্পর্শ হলুদ
রয়েছে তার অগ্নিশিখার-চিহ্ন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ।

আমার ভুল জন্ম এপাড়ে মুখ লুকায়
ক্ষুধার্ত জন্মভূমির অসহিষ্ণু অভিশাপে ।

বুধবার, ডিসেম্বর ২০

যা ঘটে

যা ঘটে
দেবজ্যোতিকাজল

রাজনীতিতে রাত নেই
দিনেই চলে খুন-খারাপি
রাজনীতিতে রাজা নেই
মানুষ রূপী জ্ঞান-পাপী ।

বিকেল বিকেল স্বপ্ন সাপ
রাত জাগানো অন্ধ ভোর
চমকে উঠি চরক চোখে
মাথার মধ্যে গহীন ঘোর ।

বদল যদি না বদলায় চোখ
বদলে যায় সব দৃশ্য দূষণে
সামনে গিয়ে দাঁড়ায় যখন
বলতে কথা গাছের কানে ।।

শুক্রবার, ডিসেম্বর ১৫

প্রতিশ্রুতি

এক

বিছানায় টেনে আনি প্রতিশ্রুতি :
তোমার আমার কাছাকাছি নগ্নতা :

দরজায় সিটকি । ভালবাসার অজুহাত :
প্রতিশ্রুতি ছিল বংশায়ী মেয়ে সন্তানের :

সময়=( 10:58 pm )

দুই

মৃত্যুর পর আমার অংশ হবে= প্রতিশ্রুতি দাও
মেঘের পর আমার বৃষ্টি হবে =
প্রতিশ্রুতি দাও
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সুরে কন্ঠের গান হবে
=প্রতিশ্রুতি দাও
ধূসর ঝড়ে সুন্দর ছায়াছবি হবে
= প্রতিশ্রুতি দাও

প্রতিশ্রুতি তুমি তার ভালবাসা হবে
আমি তোমার সাথে মরতে চাই বিশ্বস্তে ।

সময়// 11:41 pm

তিন

তোমার মস্তিস্ক জেগে
তোমার স্নায়ু জীবিত
তোমার চরম যন্ত্রণা
নিরর্থক সংগ্রাম করে
আমাকে স্তব্ধ করতে
যে প্রতিশ্রুতি নিয়েছিল
তার এক কণা
71 যুদ্ধে হারিয়েছি ।

সময়// 12:06 am

চার

গত রাতে জীবনের অদ্ভূত কষ্ট
নতুন করে সংঘাতে জড়ালো :

মৃত্যু এসে জিজ্ঞেস করল,
পৃথিবী নাকি আমায় খুঁজচ্ছে //

আমি ততক্ষণে
ছদ্মবেশী-ছায়া আলোতে →X . Y
বিচ্ছেদ তুলে রাখি প্রতিশ্রুতির জিভে ।

সময়//12:55 am

পাঁচ

কিসের প্রতিশ্রুতি !

জুতোয় লেগে থাকা ক্ষত ঘা
আমার পাঠোভবনের পন্ডশ্রম :

সরকার আসে
সরকার যায়
শুধু ক্ষিদের পেট, প্রতিশ্রুতি গিলে
আর কানের কাছে মিথ্যে শব্দগুলো
কখন জানি নেতা হয়ে গেছে তর্জনীতে

সময়// 1:03 am

ছয়

আমার ক্ষুধার যন্ত্রণা
ঘুমকে ঠাট্টা করে প্রতিরাত ।

ক্ষুধা এবং পৃথিবী
উভয় উভয়ের ধর্ষক ।

ক্ষুধা তুমি প্রতিশ্রুতি দাও একান্তে
বলো ,
মা-কে আর কখনও কাঁদাবে না ।

সময়// 2:42 am

বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১৪

প্রানের পোকাটি তুমি ছিলে

সিরিজ কবিতা
প্রানের পোকাটি তুমি ছিলে
দেবজ্যোতিকাজল

এক

তার চোখে সমুদ্র ;
চুরি হয়েছে নীলাকাশ ।
চাঁদ এখনও নড়েচড়ে
নোনা হাওয়ার ছদ্মবেশে ।

তার পায়ের শব্দ । কুমারী
মেঘে ভেসে বেড়ায়
আসা-যাওয়া
ঢেউয়ের জোয়ারে ।

দুই

নিখুঁত পদাঙ্কে আমি
স্মৃতিতে অদৃশ্য হয়ে পড়ি
সৈকত আমাকে ডেকেছে
বালির পৃষ্ঠায় ঢেউয়ের জলে
কবিতা লেখার বেগুনী প্রেমে ।

তিন

তোমার পাঁজর ধাঁধাঁর টুকরো
মাপসই কষ্ট গুগলি
ধারাবাহিক হেরো আমি

আমাদের হৃদয়
বিজ্ঞাপনের মত
চোখ হাসে উড়ে উড়ে
বিরহ মোবাইল টাওয়ারে ।

চার

রৌদ্রোজ্জ্বল সুর দীর্ঘ গান
দুপুর বন পুড়ে মাঠের কোণে

রাখালীয়া স্বরলিপি
প্রান্তিক মাঠ খোঁজে
চুরি হওয়া রেনবো রঙে ।

সময়={ 11:03 pm }

পাঁচ

আমার ঠোঁটে
ডুবে আছে :
প্রতারিত শব্দ ।

Y= স্লীপিংয়ে
দুঃস্বপ্ন ঘুমোয়
পুরুষ ভয়ঙ্করে ।

সময়=[11:39 pm ]

ছয়

হাসনুহানার গন্ধে
সাপের প্রেম উড়ে ;

একটি মেয়ের
             মত ছায়া
সবুজ ঘাসে দীর্ঘায়ু
          আঁকাবাঁকা ;

কাপুরুষী অভিশাপ
হস্তমৈথুনে রাত জাগে
বন্ধা মেয়ের শরীর দেখে

সময়= √ 12:06 am ¶

তারিখ=14 থেকে 15/12/17 ইং

আমি

আমার শৈশব আর যৌবন
বিছানায় চুরি হয়ে গিয়েছে
কেউ খুঁজে পেলে
আমার পঞ্চাশ নম্বর ঘরে
                       জমা দিয়ো ।

আমি নিজে-কেও হারিয়ে
                    ফেলেছি যৌবনে
আমি আমার বিশ্বাস-কেও
                       হারিয়ে দিয়েছি
আমি জানি না , আমি কে ?
আমি এই
একা একটা মনকে ছেড়ে । আর-
যেতে হবে কত দীর্ঘ অনুভূতি  ।

কখন যেনো একটু একটু করে
বাড়তে বাড়তে শেষ সিঁড়ীতে
এসে দাঁড়ালাম, না হেঁটে জোরে
বুঝতে পারি নি , বয়েসের কাছে

বন্ধুরা আমার কথা বলার বন্ধু ছিল
খেলার সাথী ছিল না কেউ শৈশবে

যে পা আমাকে হাসাবে কাঁদাবে ভেবেছি
সে পা আমাকে দিয়েছে বাহানা বিস্ময়ে
দিয়েছে থেমে যাওয়া শেষ লাইনের দাড়ি ।

বুধবার, ডিসেম্বর ১৩

আমি আকাশ থেকে চাঁদ চুরি করেছি

আমি আকাশ থেকে চাঁদ চুরি করেছি
দেবজ্যোতিকাজল

আমি আকাশ থেকে চাঁদ চুরি করে-
লুকিয়েছি আমার ঘরে । অন্ধ দেরাজে,
তুমি জীবন ভর থাকতে
                         চেয়েছিলে বলে ।

তুমি থাকবে বলেছিলে,
আমার জীবন ভর নবগন্ধ মেখে

তুমি আরও বলেছিলে নিভৃত শব্দে
খুব শীঘ্রই আসবে উষ্ণতা দিতে ঝরে
বিছানা জুড়ে ,মন ছুঁয়ে রূপালী পশমে

তাই আমি ,

প্রত্যেক সকাল অপেক্ষা করেছি শূন্যে
প্রত্যেক বিকেল হেঁটে চলি চুপসারে
প্রত্যেক রাত অঝরে কেঁদে কেঁদে
চাঁদের সঙ্গে কথা বলি আহত জ্যোস্নায় ।

তিনি আমাকে বলেছিলেন ,
“ তুমি আমাকে ভালবাস
  শীঘ্রই আসবে ,আমার কারণে ”

সকাল হতে না হতেই
একঝাঁক তারায় তুমি বিদীর্ণ আকাশ
                 হাত বাড়িয়ে পাশে টানো

আমি জোড়ে চিৎকার দেই

অজানা আকাশ থেকে
                           একটি ছোট্ট পাখি
                  আমাকে ছুঁয়ে শান্ত করে ।

আর নেই আমার সন্দেহ
আর নেই আমার কান্নাকাটি

আমি এখন জানতে পেরেছি ,
“ তুমি আমার চিরদিনের ”...।
                               

বাণী

ভালবাসা অভ্যাসে পরিণত কর , স্বার্থে না ।

সোমবার, ডিসেম্বর ১১

এককোষী ভাবনা

এক কোষী ভাবনা
দেবজ্যোতিকাজল

আমরা সবাই বন্দী
আমাদের নিজস্বে ।
ঘৃণায় এবং প্রসংশায়
মনে ও মস্তিষ্কে ।

আমরা শুধু
দোষীদের দোষ খুঁজি
আর খুঁজি বলেই
আমাদের নিজস্বের মৃত্যু ঘটে ।

আমরা যা পছন্দ করি , ও-
                  করে থাকি ,
ভালোর মধ্যে ভালো
খারাপের মধ্যে খারাপ
কিন্তু !
খারাপের মধ্যেও ভাল থাকে
ভালোর মধ্যেও খারাপ থাকে
এ কথা কখনও আমরা ভাবি না ।

শনিবার, ডিসেম্বর ৯

উত্তরের সারাদিন

উত্তরের সারাদিন
অষ্টম বর্ষ , ১৯২ সংখ্যা
২৩ অগ্রহায়ণ ১৪২৪ , রবিবার 10 ডিসেম্বর 2017

এসো মানুষ , এসো না ঈশ্বর

আমাকে পুড়িয়ে দিন , ‘ আমি বলছি,‘ ঈশ্বর ’
তামাশা বন্ধ করুণ , ‘ আমাকে জাহান্নম দিন ’ ।

বাগানের অন্য মৃতদের সাথে
আমাকে রাখুন , মাটির মৃতাংশে ।

আমি মাটিতে থুতু হতে চাই
আপনাকে খাওয়াব বলে । মিষ্টি-অসহিষ্ণ ।

কেননা , আপনি কথার কথা
           আপনি অসীমভাবে পরাজয় ।

আমি এতদিন তরঙ্গদৈর্ঘের
           শব্দ শ্লোগানে ছিলাম নিষ্পাপ
আমার ঘুমপাড়ানি হৃৎপিন্ড
     কঙ্কালটি  অধিকম্পে থাকত ভীত ।

আমি অনেক , অনেক কিছু চাই
আমি চাই......
আপনি আমাকে চেটে নিন শাস্তি ভেবে ।

আমার পাঁজর রবারব যে-ধাক্কা
দেয় ধর্মশোষক । ঈশ্বরের নখ-
আঁকড়ে ধ’রে বিদ্বেষ ফিনকি রক্তাক্তে ।

আমার কবিতারা
মৃত বদ্ধভূমিতে রেশম হৃদয়ে
গোলগাল অসহিষ্ণুতায়
              একা থুতুর উপর ভাসে ।

আপনি আমাকে খেয়ে উপভোগ করুণ
আমি রয়্যালটির মত সুস্বাদু ।

আপনি কি তাতে পূর্ণপরিতৃপ্ত ধর্ম !
আপনি কি তাতে চরিতার্থ ধর্মমত !
আপনি কি তাতে সুখী সুবর্ণ মানুষ !

আমি এত ক্ষত-এর কাছে জেগে
অনাবৃত হয়ে পবিত্র স্বপ্ন খুঁজি
ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দিব ভেবে সভ্যতা ,
আমার ভালবাসা , কল্পনা , বাস্তবতা ।

কিন্তু , আপনি ঈশ্বর !
একটা ঘুম-অসহিষ্ণু
চোখের কাছে এসে
মৃত মানবতার জাদুর রুমাল ঝুলিয়ে ধরেন ।

আমি মৃত হতে চাই না ।

আপনার লিঙ্গে
আমি ধর্ষক হতে চাই না
আপনার বুদ্ধিতে
আমি অস্ত্র হতে চাই না ।

মানবতা হেসে ওঠে বলে ,
“ আজ আমি ঠিক তো
  কাল আমি ভুল ;
  আজ আমি শপথ তো
  কাল আমি প্রতিশ্রুতি
  আজ আমি ‘সংখ্যালঘু’ তো
  কাল আমি ‘সংখ্যাগুরু’ ।”

এসো ঐশ্বরিক ধার্মীক
পদত্যাগ করি ঈশ্বরের রাজ-রাজত্বে
দেবতা আর ফেরাস্তার যুদ্ধে
আমাদের শোক মিছিলে
মুখ বাধা পড়ুক কালো ফিতেয় ।

আমাদের মৃত চেরা চোখ
ঈশ্বরকে দিয়ে দেওয়া হোক উপহার

আর , এই মৃত দেহটা
আগুনে ছেঁকে
মানবতাকে দিয়ে দেওয়া হোক উপহার ।

শুধু , একটা পরিবর্তনের জন্য ।

একটা পরিবর্তন চাই
যা । পাখির ঠোঁটে ওড়ে বেড়ায়
গাছের শাখায়-প্রশাখায়
                   সবুজের রং ছড়ায় ।

বাতাসের ধাক্কায় মেঘ যেনো যায় সরে
সাম্য সূর্য আলো দ্বিধাহীন সমাজ গড়তে ।

মাটির মত মানুষ চাই
সূর্যের মত সমাজ চাই
ভালবাসার মত ঐক্য চাই ।

বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ৭

প্রাচীন শৈশব

প্রাচীন শৈশব
দেবজ্যোতিকাজল

আমার সাথে হেঁটে চলে প্রাচীন শৈশব
আমার হাতে হাত রেখে
                          হলুদ সরল পথে ।

আমার সাথে চলে আসে

জীবিত আকাশ পথে , নক্ষত্রের গা ছুঁয়ে

গান গেয়ে , ভালবাসাকে জড়িয়ে
                               নাচতে নাচতে ।

হে প্রাচীন শৈশব ,
আমাকে পিছনে ছেড়ে দিও না
আমার সাথে এসো
আমার পুরনো বাড়ির অতীত থেকে
প্রাচীন করতোয়া থেকে
পুরনো হোল্লর শহর থেকে,
আমার প্রাচীন কবিতার সন্তান নিয়ে,

যেখান থেকে পাওয়া যায়-
স্মৃতির জ্ঞান-অর্জনের প্রজন্ম ।

হে প্রাচীন শৈশব ,
আমার সাথে এসো , কাটাব ক্লান্ত রাত
আমরা কখনও আর হব না পৃথক

আমার শৈশব কে নিয়ে
               সাঁতরাবে আমার বর্তমান
অনন্তকাল ধরে প্রতিশ্রুতির শব্দ নদীতে ।

হে প্রাচীন শৈশব ,
আমার সাথে চলে এসো ,
ফিরে দেখি সেই হাসা-হাসি
এই পুরনো মানুষের ভিতরে ।

আমাকে বাঁচিয়ে রাখার মত-
নেই কোন প্রজন্ম । তুমি ছাড়া ।

আমি বহু দূর চলে গেছি জেগে ,
                    দেখতে প্রহরী ক্ষত
অন্ধকারের ভাঁজে , যে আলোটুকু
টুকরো টুকরো বিবর্ণীয় আলো ছায়া
তার মাঝের দেওয়াল দাঁড়িয়ে ডাকে
                  আমার প্রাচীন শৈশবকে ।

হে প্রাচীন শৈশব ,
আমার কাছে চলে এসো
এই পুরনো মানুষটির ভিতরে ,
                                    হেসে ওঠে ।

সোমবার, ডিসেম্বর ৪

চার্চের আক্রমন

এঙ্গেলস তাঁর সুবিখ্যাত ‘ Dialectics of Nature ’ গ্রন্থে বিশ্লেষণ করেছেন কিভাবে বৈজ্ঞানিক চিন্তা-ভাবনাকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণের বিরুদ্ধে নিরন্তর লড়াই করে অগ্রসর হতে হয়েছে । বিশেষ করে বিজ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক চিন্তা ও আবিষ্কারের বিরুদ্ধে চার্চের আক্রমণ , বিজ্ঞানীদের উপর নিষ্ঠুর অত্যাচার , বৈজ্ঞানিক গবেষণার উপর চার্চের নিষেধাজ্ঞা , বিজ্ঞানীদের গবেষণার কাগজ পুড়িয়ে ফেলা– ইত্যাদির উদাহরণ দিয়ে এঙ্গেলস চার্চের প্রতিক্রিয়াশীল ভূমিকার উল্লেখ করেছেন ।

রামমোহন রায়

রামমোহন স্বাধীনতাপ্রেমী ছিলেন । তাই তিনি ফরাসী বিপ্লবে দারুণভাবে মোহিত হয়েছিলেন , অন্য দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন সমর্থন করেছিলেন । অথচ নিজ দেশে বিদেশী পাশ্চাত্য শাসনকে স্বাগত জানিয়েছিলেন ।

বাস্তবে ভারতীয় সমাজের রক্ষণশীলতা , কুসংস্কার এবং মোগল শাসনের শেষ পর্যায়ের বিশৃঙ্খলায় এতই বীতশ্রদ্ধ ছিলেন যে পাশ্চাত্য শিক্ষাকে তিনি মুক্তিদূত হিসাবে বিবেচনা করে এক ধরনের একতরফা বিচার বিবেচনায় অভিভূত হয়ে ব্রিটিশ শাসনের অনুরক্ত হয়ে পড়েছিলেন ।

–ভারতের সভ্যতা ও সমাজ বিকাশে ধর্ম শ্রেনী ও জাতিভেদ

শনিবার, ডিসেম্বর ২

ধর্ষণের চতুর্থ স্তবক

আমি ধর্ষিত , বন্য প্রানীতে
আমি পাহাড়,পর্বত,বন-জঙ্গল
ধ্বংস করব , পরিষ্কার করব ড্রেন
আমার ত্বকে বসছে দশ লক্ষ মশা ।

আমি আগুন , কাঠের অন্তরে জ্বলি
আমি প্রহরি হই , উপভোগ পণ্যে
আমি খেয়ে ফেলি বিষাক্ত আগুন
আমার চোখ ঠিকরে বেরোয় দশ লক্ষ ছাই ।

আমি নিস্তব্ধ , শিশুর মত চঞ্চল
আমার নিশ্বাসে হরণীয় বাতাস
আমি কেঁদে উঠি একাকাশ তিরস্কারে
আমার ঘাড়ের উপর দশ লক্ষ থাবা

আপনি যখন শেষ করেন ,
আমি তখন ক্লান্ত । ধর্ষিত ।
আপনি আমাকে অন্ধকারে ঢেকে দিলেন
আপনি আমার  বিষ্মৃত স্বপ্নের মতন
ধ্বংস হবে সামাজিক মেরুদণ্ড ।

শুক্রবার, ডিসেম্বর ১

আমি

“ আমি ”
দেবজ্যোতিকাজল

পোড়া কাঠের মুখোশ পড়ে
আগুনকে চুমু দেই বুকে টেনে

হে মুখোশ তোমার আগুন চুমু-
সমুদ্র পাকস্থলীতে মুক্ত জন্মায়,
আগুন পাল ওড়াও
                   সবুজ মরা মেঘে ।

আমার শপথ ক’রা শব্দাবলী
জলের উপর লিখে ভাসায়
শব্দ দিয়ে খোঁদাই করি
            বাকহীন কাদামাটি ।

আমার অতীত অভিশপ্ত গাছ
বাতাসে মিশিয়েছি মৃত সবুজ,
ঝড়ের মত তাই
         বুকে মুখে ঝাঁপটা লাগে ।

একটি সুতির দেয়ালে নিহত ধ্রুব
দোল খাচ্ছে  চুরি করা আকাশ,
হৃদয়ে ধুলো জমেছে ,মুখোশের খাঁজে,
পশ্চিমে বসে আছি বাতাসের ঝাপটায় ।
                     আমি কে ?
                        আমি কে ?
                          আমি কে ?