লেখার ডাগর মাঠ


মঙ্গলবার, অক্টোবর ১৬

বিদুরের ধর্ম

সভাসদ্বৃন্দকে রাজা ধৃতরাষ্ট্র প্রশ্ন করছিলেন,“ মহাশয়েরা সকলে উপস্থিত আছেন । রাজপুত্র যুধিষ্ঠির সর্বজ্যোষ্ঠ ও গুণবান । অতএব এ রাজ্য তিনিই পাইবেন , তদ্বিষয়ে আমার কিছুমাত্র বক্তব্য নাই । এইক্ষণে এই জিজ্ঞাস্য যে , আমার এই জ্যেষ্ঠপুত্র , যুধিষ্ঠিরের পর রাজ্যভাগী হইবে কি না ? আপনারা কি বিবেচনা করেন , বলুন ।” ( আদিপর্ব/কালীপ্রসন্ন )

অস্বীকার করার উপায় নেই , রাজা ধৃতরাষ্ট্রের এমত আচরণ যথার্থ গণতান্ত্রিক । সেদিন বিদুরগোষ্ঠীর প্রভাবে একটি অত্যন্ত অমানবিক ও নিষ্ঠুর রায় দিয়ে না বসত , তাহলে হয়ত খণ্ডিত ইন্দ্রপ্রস্থের নয় , সমগ্র করুরাজ্যেরই সম্রাট হতেন যুধিষ্ঠির ।

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য , ধার্মিক বিদুর রাজ প্রশ্নের উত্তরে সভায় রাখলেন একটি নির্দয় প্রস্তাব , ভবিষ্যতে কে রাজা হবেন , সে তো অনেক দুরের কথা , দুর্যোধন

বিদুর তাঁর শিখাধারী ব্রাক্ষণগোষ্ঠীসহ উথ্থাপন করলেন , অদ্ভূত দাবি । বললেন , রাজা ধৃতরাষ্ট্রের উচিৎ , এই মুহুর্তে তাঁর প্রথমজাত সন্তানকে পরিত্যাগ করা । কেননা সন্তানটি বিবিধ দুর্লক্ষণ নিয়ে জন্মগ্রহন করেছে । তার জন্মমূহুর্তে দেখা যাচ্ছে সমঊহ অশুভ চিহ্ন ।

কি সেই দুর্লক্ষণ ?

মহাভারত বলেছেন , “ সে সময় বায়ু প্রবলবেগে বহিতে লাগিল , দিগদাহ আরম্ভ হইল । ফলতঃ তৎকালে অশেষাবিধ অমঙ্গলসূচক ঘটনা উপস্থিত হইল ।

হতে পারে দুর্যোধন জন্মকালে প্রচণ্ড ঝড় ও ব্রজঘাত হয়েছিল । সম্পূর্ণ প্রকৃতির ঘটনা । কিন্তু শ্রীকৃষ্ণের জন্মকালেও তো এমন প্রকৃতি ছিল । তিনি হয়ে গেলেন ভগবান আর দুর্যোধন হয়েগেলেন দুরাত্মা !

দুর্যোধনের জন্ম হয়েছিলে চৈত্রমাসের কাক ভোরে ( রাত্রী ছয় ঘটিকায় )

কোনো মানুষ দুরাত্মা ও পুণ্যাত্মা হয়ে জন্ম গ্রহন করেন না ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন