লেখার ডাগর মাঠ


মঙ্গলবার, মে ৯

আমার কথা

১৯৮৮ সাল । আমার জীবনের একটা মোড় ছিল । আমি দীর্ঘ রোগ ভোগের পর । আমি সবেমাত্র একটু সোজা হতে চাইছিলাম । হুম , এই সালেই আমার একক চিত্র প্রদর্শনী হয় । প্রদর্শনীটা আমাকে সজীব করেছিল । আমি নিজের প্রতি আস্তা খুঁজে পেয়েছিলাম । ডাক্তার তো জানিয়েই দিয়েছিল আমি আর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পার না । আমি কথাটা শুনার পর যতটা ভেঙে পরেছিলাম । ঠিক এই ৮৮ সাল আমাকে ততটাই ফিরে দিয়েছিল নতুন করে বাঁচার রসদ । যাই হোক ।

১৯৮৮ সালে আমি বাড়িতে শুরু করি রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তীর অনুষ্ঠান । অনুষ্ঠানটা বেশ বড় সড় না হলেও একদম যে ছোট হত তাও না । শেরপুরের পুরনো ও নতুন শিল্পীদের  আমি কার্ড দিয়ে আসতাম গান গাইতে হবে ব’লে  । সবাই আসত । অনুষ্ঠানটা করতাম শ্রাবণ মাসে । আর তার কারণ ছিল দুই কবির জন্ম জয়ন্তী এক সঙ্গে পালনের জন্য  । কি অনাবদ্য সে অনুষ্ঠান হতো । আমার বন্ধু-বান্ধরা আমাকে সহযোগিতা করত । আমার বন্ধুরা ছাড়া আমি অপূর্ণ ছিলাম । ওরা আমাকে যে ভাবে সহযোগিতা করেছে এ কথা আমি কখনও ভুলব না । ওরা আমাকে কখনই বুঝতে দেয়নি আমি ঘরমুখী , পথমুখী নয় । কেনো না আমার বন্ধু ভাগ্যটা ভাল ছিল । আমি এই নিঃসঙ্গ জীবনেও প্রবাসে বসে আমার বন্ধুদের নিয়ে ভাবি । কেননা এমন বন্ধু সবাই পায় না ।

এই রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তী তে অনেকেই গান গাইতে আসত । দু-একজনের নাম ছাড়া আজ আর কারু নামই মনে নেই । ১৯৮৮- থেকে ১৯৯৪ সাল অবধি একটানা এই সাত বছর দায়িত্বটা আমি পালন করে গেছি । আজ আমি বহু দূরে চলে এসেছি । সমস্ত স্মৃতিকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে ।  শুধু জাবর কাটা ছাড়া এখন আর কোন ভূমিকা নেই  আমার জীবনের  ।  ইচ্ছা থাকলেও সে সব পরিবেশে আর ঢুকতে পারি না । পাশে পায় না আমার বন্ধুদের  আচলায়তন জীবনে । বাঁকি জীবনটা তুলে রেখেছি ভাঙা তাকে । সেখানে উঁই আর ঘুন পোকায় একটু একটু করে নিঃশেষ করছে আমার অতৃপ্ত এগিয়ে যাওয়া কে ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন