লেখার ডাগর মাঠ


মঙ্গলবার, মে ৯

আমার কথা

আমাদের দত্তপাড়ায় একটা ক্লাব ছিল । এটা সত্তর দশকের কথা বলছি । বেশি সম্ভব ক্লাবটার নাম ছিল গীতাঞ্জলি ক্লাব । ক্লাবটাতে একটা ছোট্ট গ্রন্থাগার ছিল । একসময় ক্লাবটা উঠে যায় । আমি তখন খুবই ছোট । সেই ক্লাবের একখানা বই বাবার সুবাদে আমাদের বাড়িতে আসে । বইটার নাম রবিঠাকুরের গীতাঞ্জলি । বইটা নিয়ে মাঝে মাঝে কবিতাগুলো পড়তাম । সেই প্রথম রবি ঠাকুরকে চেনা ও তাঁর কবিতার সঙ্গে পরিচয় । আমার খুব মনে আছে । বৃষ্টির দিনে বইটা নিয়ে চিৎকার করে করে কবিতা আবৃত্তি করতাম । যত বড় হয়েছি ততই রবি ঠাকুরকে নিজের করে নিয়েছি । তারপর প্রাইমারী স্কুল ডিঙ্গিয়ে হাইস্কুলে যাওয়া । স্কুলে বার্ষিক অনুষ্ঠান হবে । আহম্মদ আলী হেড মাষ্টার । আমার অবশ্য ঔ স্কুলে একজন গাইড লাইন ছিলেন । তিনি আমাকে যতটা ভালবাসতেন ততটাই আমাকে শাসন করতেন । তিনি হলেন , বীরেন্দ্র নাথ চৌধূরী । আমি বারু কাকা বলে ডাকতাম । কাকা কয়েক জন ছাত্রকে আমাকে ডাকতে পাঠিয়েছেন । ব্যপারটা কি ? আমাকে এক প্রকার চ্যাং কোলা করে নিয়ে যাওয়া হলো । গিয়ে দেখি কাকু হেড স্যারের ঘরে বসে । আমাকে দেখে কাকা বলল , তোকে জুতা আবিষ্কারের পণ্ডিতের অভিনয় করতে হবে । হুম সেই জুতা আবিষ্কারের মধ্যে দিয়ে নতুন রবি ঠাকুর কে চিনলাম । সে বার লিচু চোর কবিতাও অভিনয় করে করে আবৃত্তি করেছিলাম । বারু কাকা , উদয় স্যার ও সদানন্দ স্যার আমাকে শিখিয়েছিলেন কি ভাবে অভিনয় করে আবৃত্তি করতে হয় । কবিতাটা আবৃত্তি করে দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছিলাম । আমি ছোট থেকে রবি ঠাকুরের প্রতি দূর্বল ছিলাম । আমার সাহিত্য ও শিল্প জীবন ছিল রবি ঠাকুর । আমার বেশ মনে আছে । আমি প্রথম ছবি আঁকি রবি ঠাকুরের ছবি । স্কুলের ব্লাক বোর্ডে । আর একটা ছবি খুব আঁকতাম । গোপাল ভাঁড়ের পেট মোটা কার্টুন আদলের ছবি । তারপর থেকে যত বড় হয়েছি তত খুটিয়ে খুটিয়ে রবি ঠাকুর কে জেনেছি ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন