লেখার ডাগর মাঠ


বুধবার, মার্চ ১৫

ফুলের গায়ে রক্ত

ফুলের গায়ে রক্ত ( পরবর্তি অংশ )

বরিষার কথাগুলো শুনে মনে হলো ও বোধহয় যেনে শুনেই কিছু একটা আঁচ করতে পেরেছে । মেয়েরা যদিও একটু সন্দেহ বাতিক বেশি । তবুও বরিষার কথায় যুক্তি খুঁজে পেলাম । বরিষার মেজাজটা আজ দার্শনিক দার্শনিক লাগছে । কি সব বলছে বরিষা । এত বিজ্ঞ ভাব এর আগে কখন দেখিনি । আমি আর ভাবতে পারছি না । রাতের স্বপ্ন আর সকালে রবিষার কথা , কোথায় যেনো আমাকে ভাবাচ্ছে । সত্যিই কি কিছু একটা ঘটেছে ! আচ্ছা , ঔ ফ্ল্যাটে দুটো ভাড়েটে ছাড়া আর কেও আছে বলে আমার জানা নেই । হুম । একজন ব্যাচেলারও থাকেন । আর একজন সবে মাত্র বিয়ে করেছেন । ক’দিন হবে ? হাতে গোনা মাস তিনেক । বৌটা কিন্তু ভারি চমৎকার দেখতে । এমন সুন্দরী দ্বিতীয়টি আগে কখনও দেখিনি । কোথায় যেনো বৌটাকে দেখেছি ? অনিক একবারে মনে করতে পারল না । হুম । পাশের দোকানে , ঋতুমতী তুলো কিনতে গিয়েছিলেন । আমিও কি একটা কিনতে দোকানটিতে গিয়েছিলাম । তবে কি ওদের মধ্যে কিছু একটা হয়েছে ? কি জানি বাবা । হলেও হতে পারে । আজ কাল তো কতই না অদ্ভূত অদ্ভূত ঘটনা ঘটছে মেয়ে ঘটিত । না না এ হতে পারে না । সবে মাত্র ওদের বিয়ে হয়েছে । মেয়েটার কি পুরনো কোনো প্রেম-ট্রেম । হুম হতেও পারে । লোকটা তো সারাদিন অফিসে থাকে ....।

এই অফিস কথা মনে হতেই । বুকের মধ্যে ছ্যাৎ করে চমকে উঠল । শুনেছি লোকটা ব্যাঙ্কের ম্যানেজার । সোজা আমি ক্যালেণ্ডারে তাকালাম । আজ তিরিশে ডিসেম্বর । ব্যাঙ্কের যাবতীয় হিসেবের দিন । উহু । ডাল মে কুচ কালা হ্যাঁয় । অবশ্যই লোকটার থাকার কথা । তবে কি ব্যাঙ্কের টাকা-পয়সা মেরে  হাওয়া হয়েছেন । কি জানি হতেও পারে । আজ কআল ভাল মানুষের বড়ই অভাব ।

অনিক ভাবনা থামিয়ে । এক সেকেণ্ড বসে রইল না । তাড়াহুড়া করে ঘর থেকে বেরতে বরিষার সামনে পরল ।বরিষাকে পাশ কেটে বাইরে বের হয়ে । লোকটার তেতালার দিকে তাকাল । সত্যি তো জানালাগুলো বন্ধ । বরিষাও অনিকের পিছু পিছু এসে পাশে দাঁড়াল । অনিক কে তেতালায় তাকাতে দেখে । বরিষা হতভম্ব মুখে বলল ,“ কি গো থানায় টেলিফোনটা করেছো ?”

অনিক একদম রবিষার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল ,“ না । (তারপর একটু থেমে ) আচ্ছা রবিষা এমনও তো হতে পারে । লোকটা ব্যাঙ্কের টাকা-পয়সা নিয়ে চম্পট দিয়েছেন ।”

বরিষা সেই কথার পিঠে কোনও মন্তব্য না করে । থমথমে মুখ করে মাথা নেড়ে সম্মতি জানাল । কিন্তু অনিক কথা না থামিয়ে বলল ,“ পালাবে কোথায় । ধরা তো পড়তেই হবে । যাবে কোথায় । তাছাড়া জানো বরিষা আজ ব্যাঙ্কের বাৎসরিক হিসার-নিকাষ । অফিস তো খোলাই আছে । ব্যাঙ্কের ভিতরে কাজ চলছে ।

বরিষা এবার যুক্তি দিয়ে উত্তেজিত ভাবে বলল,“ না না । তুমি যা ভাবছ সব ভুল । তোমার কোথাও ভুল হচ্ছে । আরে বাবা ব্যাঙ্কের টাকাই যদি হাইজাক করবে তবে এতক্ষণে থানা পুলিশ হতো । সকাল সাড়ে দশটার নিউজ আমি টিভিতে দেখেছি । কই , এমন কিছু হয়েছে বলে , বলল না তো ।

টিভি কথাটা শুনতেই ।  অনিক এক প্রকার তেড়ে ঘরে ঢুকে নিউজ চ্যানেল চালালো । বরিষাও অনিকের পাশে বসে একটা তিরস্কার হাসি দিলো । অনিক প্রায় আধা ঘন্টা টিভির সামনে বসে কোন হোদীস পেলনা । বরিষা এবার একঝলক অনিকের মুখের দিকে দ্যাখে । আর গজগজ করে বলে ,“ আর এতবড় ঘটনা যদি সত্যিই ঘটত তবে এতক্ষণ চারিদিকে হৈচৈ পরে যেত । তোমার বিচার বুদ্ধির লোভ পেয়েছে । ভুলে রোগ ধরেছে ।

-চলবে

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন