লেখার ডাগর মাঠ


শনিবার, জুন ২৪

আমার কথা

আজ রথ

আমি ছোটবেলায় ধর্মিয় পুস্তক পড়ে জেনেছিলাম এই রথযাত্রার মূল ব্যপারটা । তখন আমি ঈশ্বর বিশ্বাসী ছিলাম । আমি একটা হিন্দু ধর্মিয় পত্রিকার সাথেও যুক্ত ছিলাম । পত্রিকার নামটা ছিল ‘ মাসিক সমাজ দর্পণ ’ । রিক্সায় চড়ে সারা শেরপুরের হিন্দু সমাজের মধ্যে পত্রিকা বিলি করতাম । সেই পত্রিকা পড়েই আমি জানতে পেরেছিলাম । জগন্নাথ শুভদ্রা বলরাম কেন বছরের একবার করে রথে পরিভ্রমন করেন । মূলতঃ তাঁরা ছিলেন প্রতিবন্ধী । কিন্তু বাস্তর ভাবে সমাজে যেসব প্রতিবন্ধী মানুষ থাকে তাঁরা তেমন ভাবে কোনো ধর্মিয় উৎসবে অংশ গ্রহণ করতে পারে না । এবং আমাদের সমাজপতিরাও তাঁদের নিয়ে ভাবেন না ।

তখন থেকেই আমার মাথায় ছিল । এই রথযাত্রায় প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কিছু একটা করব । আর তা থাকবে জগন্নাথ বাড়ির  রথযাত্রা উৎসবকে ঘিরে । চিন্তা ছিল শেরপুরের যত প্রতিবন্ধী আছে তাদের এই উৎসবে নিয়ে এসে তাদের জন্য একটা ট্যাবল সাজিয়ে অংশগ্রহন করাব । সমাজে বার্তা দেওয়া একটা কাঠের প্রতিমা যদি রথে চড়ে যেতে পারে তবে বাস্তবিক প্রতিবন্ধীরা কেনো সমাজিক ভাবে অবহেলা রইবে । ধর্ম তো মানুষকে নিয়ে । ধর্মিয় উৎসব তো মানব সমাজের প্রগতীর প্রতীক । কিন্তু তা আর হয়ে উঠে নি । ১৯৯৫ সাল সেসব ভাবনার সূতো ছিঁড়ে । তারপর প্রবীর ঘোষের বইএর সাথে পরিচিত । সে সব বই পড়তে পড়তে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখি আস্ত একটা নাস্তিককে । তাই এখন মানুষকে নিয়েই ভাবতে ভাল লাগে । যেখানে মানুষের উত্তরণ আছে । সে পথ দিয়ে চলতেই ভাল লাগে । ভেদাভেদ তো মনে থাকে । চিন্তায় থাকে । সমাজে থাকে । মানুষের সাথে মানুষের ভেদাভেদ কখনই তৈরি হয় না । ভেদাভেদ যা আছে ধর্মিয়গত , পদরিগত ।

তাই এসো আমরা মানুষ হই । হিন্দু , মুসলিম ,খ্রিস্টান বা বৌদ্ধ যেনো না হই ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন