লেখার ডাগর মাঠ


বুধবার, এপ্রিল ১৯

আমার কথা

ধর্ম যেমন সরল শিশুর মত ঠিক তেমনি আবার নির্মম জাল্লাদের মত । আমি অনেক কাছে থেকে দেখেছি এই দুই ধারার সরল ও কঠিন কে ।

সেই গ্রাম । যে গ্রামটা আমার বুকের উপর বসে আছে । শুধু যে খারাপ স্মৃতি আছে তা নয় । গ্রামটার বাজারের মধ্যে একটা বিশাল পাকুর গাছ ছিল । গাছটার নীচে গরমের দিনে সকাল থেকে অনেক রাত অবদি আড্ডা হতো । নানা আলোচনা । ধর্ম , রাজনীতি , কার বৌ কার সাথে পরক্রিয়া করছে , কার মেয়ে কার সাথে প্রেম করছে । মাঝে মাঝে খেলা , টিভি সরিয়াল থেকে শুরু করে সব থাকত তাতে । যাই হোক ।

আমাকে ওরা মাঝে মাঝেই জিজ্ঞেস করত । আপনার মা মারা গেলে উতুরী বা শ্রাদ্ধ করবেন না ।

আমি এক সেকেণ্ড দেরি না করে উত্তর দিতাম , প্রশ্নই আসে না এসব পালন করা ।

হুম । ওরা আমার কথা শুনে সহজ সরল ভাষায় বলত , সে আপনের ব্যক্তিগত ব্যপার । নাই করতে পারেন ।

বেশ কিছু দিন পর । এক কমরেডের মা মারা জান । কমরেড সিদ্ধান্ত নেয় তিনি পারলিক ক্রিয়া করবেন না । যথা রীতি তাই করলেন ।

কিন্তু শেষ অবদি যা ঘটল আমি অবাক হয়ে গেলাম । সারা গ্রামের লোক কমরেডের নামে যা-তা বলে বেড়াতে লাগল । কমরেড মাস দুয়েক পর বাড়িতে একটা মাকে নিয়ে স্মরণ সভার আয়োজন করল । এবং গ্রামের লোকদের নিমন্ত্রণ করল । কি আশ্চার্য একটা প্রানীও খেতে এলেন না । কমরেডের পাটির লোকদের নিয়ে কর্মটা শেষ করল । প্রচুর খাবার নষ্ট হলো । আমিও সেই অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত ছিলাম ।

সেই পাকুড় গাছের নিচে একদিন অনেকেই আড্ডা দিচ্ছিল । আমার এক বন্ধু আমাকে ডাকল । গিয়ে দেখি আড্ডাটা বেশ জমেছে । অনেকেই আছে সেখানে । আমি ওদের সবার উদ্দেশ্যে বললাম , বিপুল দার বাড়িতে তোমরা কেউ গেলে না কেনো ?

সরাসরি একজন কর্কশ ভাষায় উত্তর দিলেন , ও শালা মানুষ নাকি । যে মায়ের পারলিক ক্রিয়া করে সে তো জানোয়ার সমতুল্য ।

আমি বললাম , সে তো তাঁর মায়ের ভাল মন্দ সবাই দেখেছেন বেঁচে থাকতে । আর তাছাড়া তোমরা যে আমাকে বলতে ,কে কি পালন করবে তার সেটি ব্যক্তিগত ব্যপার । কিন্তু এখন তো বুঝতে পারছি সবটাই গ্রাম্য সমাজের ব্যপার ।

নাস্তিকদের বলছি খবরদার আস্তিকদের কথা বিশ্বাস করবেন না । ওরা মুখে যা থাকে ওদের ভীতরে অন্য থাকে

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন