লেখার ডাগর মাঠ


বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১৭

ভারতে জ্যোতিষবিদ্যার আগমন

হ্যাঁ , ভারতীয় হিসেবে গর্ব হয় যখন দেখি চীন মিশর গ্রীস সকল সভ্যতায় জ্যোতিষী'র কথাবার্তা থাকলেও ভারতীয় সভ্যতায় তার ছায়া মাত্র নেই গ্রীক সভ্যতা বাদ দিলে বাকি সব সভ্যতায় এই জ্যোতিষচর্চা রাজ রাজরাদের বাড়ির বিষয় ছিল সব রাজায় একজন বা একের অধিক রাজজ্যোতিষী রাখতেন ।
কখন যুদ্ধে যেতে পারলে জয় হবে , কখন সিংহাসনে রাজপুত্রের অভিষেক হবে,কখন রাজকন্যাকে বিবাহ দিলে ভাল হয় -এসব কথা রাজজ্যোতিষীদের গোনা-গোনি করে বলতে হয় সাধারণ মানুষ 'রাজাউজির'দের নিয়ে মাথা ঘামাতেন না । গ্রিক সভ্যতায় এসে দেখলাম জ্যোতীষ বিষয়টা আটপৌরে চরিত্র অর্জন করছে ।সাদামাটা মানুষও জ্যোতীষ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে । ভাল মন্দ জানতে মানুষ জ্যোতীষের কাছে যাচ্ছে নিশ্চয় সেইযুগে কোন কারসাজি ছিল রাজার বাড়ির আচার বাইরে ছড়াতে পারলে ব্যবসা বাড়ে অনেক বুদ্ধি খাটিয়ে একদল মানুষকে এই কাজ করতে হয়েছে যেখানে মানুষের বসতি সেখানে জ্যোতীষির আলোচনা করতে হয়েছেবিজ্ঞানের ইতিহাস পড়লে আমরা দেখি , গ্রিস দেশের পণ্ডিতরা একটা বিষয়ে খুব অহংকারি ছিলেন কি বিষয় ? গ্রীক সভ্যতার আগে নাকি কোন বিজ্ঞান ছিল না কি ছিল তবে ? ওঁরা বলত, জ্ঞান ছিল , বিজ্ঞান ছিলনা আমরাও জানি কথা দুটির আলাদা মানে জ্ঞান বলতে কত কি হতে পারে কিন্তু বিজ্ঞান বলতে নিয়ম কানন মেনে কথা বলতে হয়

ভারতে কি ভাবে জ্যোতিষবিদ্যার আগমন

গ্রিক সভ্যতার শেষ দিকে ছিল ব্যাবিলন সভ্যতা সেই সভ্যতারই একজন রাজা ছিলেন আলেকজাণ্ডার আলেকজাণ্ডার খ্রিস্টপূর্ব ৪০০ সালের কাছাকাছি আমাদের দেশ আক্রমণ করেন তখনই ওদের দেশ থেকে এই দেশে জ্যোতিষবিদ্যা'র আমদানি ঘটে গ্রীক সভ্যতার আমলে জ্যোতিষচর্চা ঘরে ঘরে ঢুকে পড়ে কোষ্ঠি তৈরি হয়
বাইরে থেকে কোন কিছু এলেই তা বেঁচে থাকে না তাকে বাঁচিয়ে রাখতে হয় প্রথম যে নামকরা মানুষ জ্যোতিষ বাঁচিয়ে রাখতে উদ্যোগী হয় তিনি ছিলেন বরাহমিহির ছয় শতকের চরিত্র বরাহমিহির পণ্ডিত মানুষ নানা বিষয়ে তাঁর বই রয়েছে গণিত জ্যোতিষ ভূগোল এমন কি প্রাণীবিদ্যাতেও তাঁর উঁচ্চমানের বই ছিল তার কথা বলতে গেলে দুটো বই-এর কথা বলতে হয় পঞ্চসিদ্ধান্তি আর বৃহৎসংহিতা প্রথম বইটিতে হিন্দু জ্যোতিষবিদ্যার নানা ভাবনা চিন্তা রয়েছে
আমাদের দেশের বিশিষ্ট জ্যোতিষবিজ্ঞানী জয়ন্তু বিষ্ণু নারলিকার ১৬ই জুন ২০০১ তারিখের 'ইকোনমিক অ্যাণ্ড পলিটিকাল উইকালি' পত্রিকায় পরিষ্কার লিখেছেন, বৈদিক জ্যোতীষবিদ্যা 'বৈদিক' নয় , বিজ্ঞান'ও নয় আমাদের বেদের কোথাও এই বিষয়ে কথা নেই বরং বলা যায় আর্যভট্ট প্রথম (পঞ্চম শতাব্দ) থেকে শুরু করে ভাস্কর দ্বিতীয় ( দ্বাদশ শতাব্দ ) পর্যন্ত আমাদের জ্যোতিবিজ্ঞান চর্চা ঈর্ষণীয় মৌলিকত্বের স্বাক্ষর রেখেছে ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন