লেখার ডাগর মাঠ


বুধবার, আগস্ট ৫

অস্পৃশ্যতা কি জন্মগত ?

অস্পৃস্যতা কি জন্মগত ?

অনেক হিন্দুকে ঈশ্বর আছে কি নেই এই প্রশ্নে আসলেই তারা একটা যুক্তি দিয়ে থাকেন , সেটি হলো , “ঈশ্বর যদি নাই থাকত তবে সারা বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষ ঈশ্বরের উপসনা করত না ।” খুব ভাল কথা , যদি তাই হয় তবে আপনার সমাজে 10% ব্রাহ্মণ থাকলেও 60% শূদ্র আছে । তবে ব্রাহ্মণদের থেকে শূদ্রদের আধিপত্ত বেশি থাকবে না কেনো ? শূদ্ররা কেনো অস্পৃস্য তকমা নিয়ে এই সমাজে বাঁচবেন ? তার কোন সৎ উত্তর এই গাণ্ডু হিন্দুদের কাছ থেকে পায় না ।

আবার গীতার বর্ণপ্রথার কথা উঠলে এরা বুঝাতে চায় যে , গীতায় নাকি কর্মের ভিত্তিতে জাতি প্রথার কথা বলেছে , জন্মগত ভাবে জাতিপ্রথার কথা বলেনি । বেশ মানলাম । আপনি যা বলছেন , সঠিক । আপনার পাশের বাড়িটি যদি কোন ব্রাহ্মণ জেঠু বা দাদু বাড়ি হয় তাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করুণ তো । যা ভাবছেন বা যা বললেন তা ঠিক কি না ? আমি হলফ করে বলতে পারি । আপনি যা শুনবেন তাতে আপনি আহত হবেন । আপনি কি কখনও শুনেছেন , কোন ধর্মগুরু মুচী ও মেথর পরিবারের কাউকে কৃষ্ণমন্ত্র দিতে ? না , হয়তো শুনেনি । কেনো শুনেনি জানেন , ঐ মনুসংহীতা আর গীতা যায় বলুন , সেখানে জন্ম সূত্রেই জাতি প্রথার কথা বলা হয়েছে । বৈদিকযুগে এই জাতিপ্রথার এত বাঁধা নিষেধ না থাকলেও , অথর্ববেদের শেষ সময় থেকে জাতিপ্রথার চরম বাঁধা নিষেধ শুরু হতে থাকে । ব্রাহ্মণ শাসন কালে তা চরমে পৌঁছে যায় । সেসব ইতিহাস আজ কলঙ্কিত ইতিহাস । যাই হোক ।

 আর একটা কথা, আপনারা কখনও কি দেখেছেন মেথর ও মুচীদেরকে দেব মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হয় কি-না ? আমি যতটা জানি এদের মন্দিরের বারান্দা অবধি উঠার অনুমতি আছে । কিন্তু ভীতরে ঢুকার অনুমতি নেই ।  তারপর নিউজ পেপারে পাত্র-পাত্রীর সংবাদে যা দেখি তা কি ভুল ? না । 

এরা ধর্মের সম্পর্কে কিছু না জানলেও । এরা ধর্মের নিন্দা শুনতে চায় না । এদের তাতে নাকি লড্জাবোধ হয় । এরা কানে যা শুনে সেটিই বিশ্বাস করে । পড়তে এদের সময় নেই । এরা এক একটা কর্ণজ্ঞানের বিদ্যান । আবার এরা মনে করে ধর্মে কখনও ভুল থাকতে পারে ? অপদার্থতার একটা সীমা থাকে কিন্তু এদের ভিতরে তাও নেই । আরে গর্দভ ধর্মে যদি ভুল নাই বা থাকবে তবে সতীদাহ প্রথা , গঙ্গায় সন্তান বিসর্জন প্রথাগুলো উঠল কি করে তবে ? 

 আমি প্রচুর হিন্দু যুবকদের সঙ্গে হিন্দু ধর্ম নিয়ে আলোচনায় জড়িয়েছি । বিশ্বাস করুণ , নিজ ধর্মের অ আ জ্ঞানটুকু তাদের মধ্যে নেই । তারা পুরোপুরি গবেটমার্কা নিজ ধর্ম জ্ঞানে  । তাই বলি , আসুন , একটা পুরো সমাজকে পাল্টাতে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে । নিজ ধর্ম সম্পর্কে জানতে হবে । বিজ্ঞান কি তা বুঝতে হবে । কিসে নিজ সমাজের কল্যান হয় তাহা সমাজে প্রয়োগ করতে হবে । তবেই উঠবে জাতিপ্রথা , সতীদাহ প্রথার মত । তবেই আমরা পাব একটা উন্নত জাতি । হিন্দু জাতি হোক বিজ্ঞানময় জাতি ।

                   -নাস্তিক দেব

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন