পৃষ্ঠাসমূহ

শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ২৯

পুজোর পাঁচালি

দূর্গা পুজোর আনন্দ মূলত মেয়ে-বৌ’রাই করে থাকেন । তারা চেটে-পুটে তার স্বাদ , গন্ধ পরিপূর্ণ ভাবে আস্বাদন করেন । আর ছেলেরা শুধুই সঙ্গে থাকেন । একদম ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চাদের মত । তাও আবার আনন্দ করার জন্য না । দেহরক্ষী হিসেবে পাছে পাছে থাকেন । আর বাকি অল্প বয়সের ছেলেগুলো ! ওদের দশা আরও খারাপ । মোবাইল আর মেয়েদের পিছে পিছে এগলি ওগলি ঘুরতে ঘুরতে কারু হয়ে যায় ভোর আবার কারু হয়ে যায় জুতোর সুখতলি ক্ষয় । এদের কাজ একটাই ধম্মের ষাঁড়ের মত ঘুরতে ঘুরতে শেষে কুলুর বদল হয়ে বাড়ি ফেরা ।

পুজোর আগে থেকে শেষ অবধি গবেষণা করলে এই চিত্র ধরা পরে । চিত্রটা হলো । ধরুন আপনি কাপড়ের দোকানে যাবেন । কি দেখবেন ! মেয়েদেরই ভিড় বেশি । জুতো কিনতে যাবেন । সেখানেও আপনার চান্স নেই । সেখানেও মেয়েদের ভিড়ে আপনি বেমালুম চোখে শষ্যের ফুল দেখবেন  । কসমেটিকের দোকানে যাবেন । মেয়ে আর মহিলা দিয়ে ভরা । সারা কসমেটিক দোকানটাতে পুরুষদের জন্য স্রেফ দুটো জিনিস থাকে । আর বাদবাকি সব মেয়েদের এক কোমর বেল্ড দুই পারফিউম । না না আর একটা জিনিস থাকে । তাহলো চুল কালো করার রং ।  যাই হোক । দর্জির কাছে যাবেন । মেয়েদের ব্লাউজ আর ফল্স প্যাড় লাগানোর ঠ্যালায় আপনার লাইন নেই । বিউটি পার্লারে যাবেন । আপনার চান্স নেই । সেখানেও দেখবেন, এমন কি ছেলেদের বিউটি পার্লারে ভিড় সামলে মেয়েদের আনাগোনা । খাবারের দোকানে যাবেন । নব্বই জন মেয়ে বসে খাচ্ছে পাশাপাশি দশ জন ছেলে । তাই পুজোর উৎসব মানেই মহিলাদের দাদাগিরি । মহিলাদের উৎসব । ওরা সারা বছরে যত উৎসব আছে সব চেটে পুটে খায় । আর আপনাকে শুধু সময় মত  ছাড়তে হবে মাল কড়ি । আর ভিড় , বাচ্চা ও অন্ধকার রাস্তা সামলাতে আপনি অঙ্গরকছক.........।

পুজোর পাঁচালি

পুজোর আনন্দ মূলত মেয়ে-বৌ’রাই করে থাকেন । তারা চেটে-পুটে তার স্বাদ , গন্ধ পরিপূর্ণ ভাবে আস্বাদন করেন । আর ছেলেরা শুধুই সঙ্গে থাকেন । একদম ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চাদের মত । তাও আবার আনন্দ করার জন্য না । দেহরক্ষী হিসেবে পাছে পাছে থাকেন । আর বাকি অল্প বয়সের ছেলেগুলো ! ওদের দশা আরও খারাপ । মোবাইল আর মেয়েদের পিছে পিছে এগলি ওগলি ঘুরতে ঘুরতে কারু হয়ে যায় ভোর আবার কারু হয়ে যায় জুতোর সুখতলি ক্ষয় । এদের কাজ একটাই ধম্মের ষাঁড়ের মত ঘুরতে ঘুরতে শেষে কুলুর বদল হয়ে বাড়ি ফেরা ।

পুজোর আগে থেকে শেষ অবধি গবেষণা করলে এই চিত্র ধরা পরে । চিত্রটা হলো । ধরুন আপনি কাপড়ের দোকানে যাবেন । কি দেখবেন ! মেয়েদেরই ভিড় বেশি । জুতো কিনতে যাবেন । সেখানেও আপনার চান্স নেই । সেখানেও মেয়েদের ভিড়ে আপনি বেমালুম চোখে শষ্যের ফুল দেখবেন  । কসমেটিকের দোকানে যাবেন । মেয়ে আর মহিলা দিয়ে ভরা । সারা কসমেটিক দোকানটাতে পুরুষদের জন্য স্রেফ দুটো জিনিস থাকে । আর বাদবাকি সব মেয়েদের এক কোমর বেল্ড দুই পারফিউম । না না আর একটা জিনিস থাকে । তাহলো চুল কালো করার রং ।  যাই হোক । দর্জির কাছে যাবেন । মেয়েদের ব্লাউজ আর ফল্স প্যাড় লাগানোর ঠ্যালায় আপনার লাইন নেই । বিউটি পার্লারে যাবেন । আপনার চান্স নেই । সেখানেও দেখবেন, এমন কি ছেলেদের বিউটি পার্লারে ভিড় সামলে মেয়েদের আনাগোনা । খাবারের দোকানে যাবেন । নব্বই জন মেয়ে বসে খাচ্ছে পাশাপাশি দশ জন ছেলে । তাই পুজোর উৎসব মানেই মহিলাদের দাদাগিরি । মহিলাদের উৎসব । ওরা সারা বছরে যত উৎসব আছে সব চেটে পুটে খায় । আর আপনাকে শুধু সময় মত  ছাড়তে হবে মাল কড়ি । আর ভিড় , বাচ্চা ও অন্ধকার রাস্তা সামলাতে আপনি অঙ্গরকছক.........।


পুজোর পাঁচালি
দেবজ্যোতিকাজল

দূর্গা পুজোর আনন্দ মূলত মেয়ে-বৌ’রাই করে থাকেন । তারা চেটে-পুটে তার স্বাদ , গন্ধ পরিপূর্ণ ভাবে আস্বাদন করেন । আর ছেলেরা শুধুই সঙ্গে থাকেন । একদম ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চাদের মত । তাও আবার আনন্দ করার জন্য না । দেহরক্ষী হিসেবে পাছে পাছে থাকেন । আর বাকি অল্প বয়সের ছেলেগুলো ! ওদের দশা আরও খারাপ । মোবাইল আর মেয়েদের পিছে পিছে এগলি ওগলি ঘুরতে ঘুরতে কারু হয়ে যায় ভোর আবার কারু হয়ে যায় জুতোর সুখতলি ক্ষয় । এদের কাজ একটাই ধম্মের ষাঁড়ের মত ঘুরতে ঘুরতে শেষে কুলুর বদল হয়ে বাড়ি ফেরা ।

পুজোর আগে থেকে শেষ অবধি গবেষণা করলে এই চিত্র ধরা পরে । চিত্রটা হলো । ধরুন আপনি কাপড়ের দোকানে গেছেন । কি দেখবেন ! মেয়েদেরই ভিড় বেশি । জুতো কিনতে যাবেন । সেখানেও আপনার চান্স নেই । সেখানেও মেয়েদের ভিড়ে আপনি বেমালুম চোখে শষ্যের ফুল দেখবেন  । কসমেটিকের দোকানে যাবেন । মেয়ে আর মহিলা দিয়ে ভরা । সারা কসমেটিক দোকানটাতে পুরুষদের জন্য স্রেফ দুটো জিনিস থাকে । আর বাদবাকি সব মেয়েদের এক কোমর বেল্ড দুই পারফিউম । না না আর একটা জিনিস থাকে । তাহলো চুল কালো করার রং ।  যাই হোক । দর্জির কাছে যাবেন । মেয়েদের ব্লাউজ আর ফল্স প্যাড় লাগানোর ঠ্যালায় আপনার লাইন নেই । বিউটি পার্লারে যাবেন । আপনার চান্স নেই । সেখানেও দেখবেন, এমন কি ছেলেদের বিউটি পার্লারে ভিড় সামলে মেয়েদের আনাগোনা । খাবারের দোকানে যাবেন । নব্বই জন মেয়ে বসে খাচ্ছে পাশাপাশি দশ জন ছেলে । তাই পুজোর উৎসব মানেই মহিলাদের দাদাগিরি । মহিলাদের উৎসব । ওরা সারা বছরে যত উৎসব আছে সব চেটে পুটে খায় । আর আপনাকে শুধু সময় মত  ছাড়তে হবে মাল কড়ি । আর ভিড় , বাচ্চা ও অন্ধকার রাস্তা সামলাতে আপনি অঙ্গরকছক.........।

বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ২৮

বিদ্যাসাগর

বিদ্যাসাগর পিতৃদর্শনে কাশীতে গমন করিলে সেখানকার অর্থলোলুপ কতকগুলি ব্রাহ্মণ তাঁহাকে টাকার জন্য ধরিয়া পড়িয়াছিল। বিদ্যাসাগর তাহাদের অবস্থা ও স্বভাব দৃষ্টে তাহাদিগকে দয়া অথবা ভক্তির পাত্র বলিয়া জ্ঞান করেন নাই, সেইজন্য তৎক্ষণাৎ অকপটচিত্তে উত্তর দিলেন, “এখানে আছেন বলিয়া, আপনাদিগকে যদি আমি ভক্তি বা শ্রদ্ধা করিয়া বিশ্বেশ্বর বলিয়া মান্য করি, তাহা হইলে আমার মতো নরাধম আর নাই।’ ইহা শুনিয়া কাশীর ব্রাহ্মণেরা ক্রোধান্ধ হইয়া বলেন, “তবে আপনি কী মানেন।’ বিদ্যাসাগর উত্তর করিলেন, “আমার বিশ্বেশ্বর ও অন্নপূর্ণা, উপস্থিত এই পিতৃদেব ও জননীদেবী বিরাজমান।’
যে বিদ্যাসাগর হীনতম শ্রেণীর লোকেরও দুঃখমোচনে অর্থব্যয় করিতে কুণ্ঠিত হইতেন না, তিনি কৃত্রিম কপট ভক্তি দেখাইয়া কাশীর ব্রাহ্মণের প্রার্থনা পূর্ণ করিতে পারিলেন না। ইহাই বলিষ্ঠ সরলতা, ইহাই যথার্থ পৌরুষ।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরঃ
২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০–২৯ জুলাই ১৮৯১।
সংগৃহীতঃ Ramkrishna Mahapatra.

বুধবার, সেপ্টেম্বর ২৭

এরজন্য কি ধর্ম দায়ি

ভারতের হিন্দুরা এখনও যে সিরিয়া-ইরাকের আই এস- এর মত আচরন করে নি মুসলমানদের ওপর , এ জন্যে তাদের হিন্দুদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিত
==============================================
মুসলমানরা নানা কায়দায় ১৯৪৭ সালের পর থেকে পাকিস্তানের ১২% হিন্দু থেকে কমে ০.৫% এ নামিয়ে এনেছে। বাংলাদেশের হিন্দুদের সংখ্যা ৩২% থেকে ৮% এ নামিয়ে এনেছে। পক্ষান্তরে হিন্দুদের উদারতার কারনে , ভারতে ১৯৪৭ সালের পর থেকে মুসলমানদের সংখ্যা বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। হিন্দুরা কখনই অন্য ধর্মের প্রতি বিরূপ ছিল না। তারা অন্তত: ভিণ্ন ধর্মের লোকদের সাথে সহাবস্থান করতে শিখেছিল যা কিন্তু মুসলমানরা কখনই পারে নি।

উদাহরন - পাকিস্তান , বাংলাদেশ ইত্যাদি মুসলিম দেশ থেকে জীবন জীবিকার তাগিদে লক্ষ লক্ষ মুসলমান বৃটেনে গেছে। কারন পাকিস্তান বা বাংলাদেশের মুমিনরা তাদের ইসলাম প্রতিষ্ঠার কারনে  ,এমন এক পরিবেশ তৈরী করেছে যাতে করে অর্থনৈতিক বিকাশ ঘটে নি , তাই মানুষের দারিদ্র কমে নি , কর্ম সংস্থান হয় নি। তার মানে ধর্মের কারনেই মুলত : এসব দেশ অনুন্নত থেকেছে , আার সেই অনুন্নত অবস্থা থেকে উন্নত জীবন যাপনের উদ্দেশ্যে মুসলমানরা বৃটেনে গেছে  ১৯৪৭ সালের পর থেকে। কিন্তু বৃটেনে গেলেও তারা বৃটিশ তো হয়ই নি, বরং এখন সেখানে যখেন ২০-৩০ লক্ষ মুসলমান জনসংখ্যা হয়েছে , তখন সেখানে তারা দাবী করছে , শরিয়া আইন সহ সব যায়গাতে হালাল খাবার , হালাল শিক্ষা ইত্যাদি। যে ধর্মের কারনে দারিদ্র জর্জরিত জীবন থেকে মুক্তির আশায় বৃটেনে গেল , সেখানে যেই একটু স্বচ্ছল জীবনের মুখ দেখল , অমনি তাদের মধ্যে আবার ইসলামী চেতনা জাগ্রত হয়ে , বৃটেনে এখন ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্যে উঠে পড়ে লেগেছে , এমনকি বহু তরুন আত্মঘাতী হামলা চালাচ্ছে। এইটাই এদের আসল চরিত্র ।

আপনারা যদি দেখেন ১৯৪৭ সালের পর থেকে ভারতে যত হিন্দু মুসলমান দাঙ্গা হয়েছে , প্রথম সূত্রপাত করেছে কিন্তু মুসলমানরাই। পরে হিন্দুরা পাল্টা মার দিয়েছে। যখন পাল্টা মার দিয়েছে , আর বেশ কিছু মুসলমান নিহত হয়েছে , তখনই তারা চিল্লাচিল্লি করে সবাইকে জানিয়েছে , আর সেটাই মিডিয়াতে এসেছে , আর তারাই যে আসল কালপ্রিট , সেটা ঢাকা পড়ে গেছে। উদাহরন ২০০২ সালের গুজরাটে রায়ট। এর মূলেও ছিল মুসলমানরা। মৌলভি হোসাইন হাজি ইব্রাহিম ওমরজি নামের এক মুসলিম নেতার পরিকল্পনারয় গোধরাতে হিন্দু তীর্থ যাত্রীবাহি এক ট্রেনে মুসলমানরা আগুন ধরিয়ে দেয়। তখন পাল্টা হিসাবে হিন্দুরা মুসলমানদের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে। পরে হিন্দু কর্তৃক মুসলমান হত্যার খবর সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে , আর এর পেছনে যে মুসলমানরাই মুলত: দায়ী ছিল সেটা ঢাকা পড়ে যায়।

গত হাজার বছরে মুসলমান শাসকরা ভারতবর্ষে কমপক্ষে ৬ থেকে ৮ কোটি হিন্দুদের হত্যা করেছে শুধুমাত্র রাজ্য দখল করার জন্যেই না , বরং ধর্মীয় কারনে। এখন হিন্দুরা ভারতে ক্ষমতায় , কিন্তু তারপরেও তারা প্রতিশোধ নেয় নি। তারপরেও কিন্তু মুসলমানরা থেমে নেই। সংখ্যা লঘিষ্ঠ হলেও , তারা সময় সময় সাপের মত ছোবল দেয়। উদারবাদী হিন্দুরা তাতে কিছু মনে করে না , তারা বিষয়টাকে রাজনৈতিক আখ্যা দিয়ে এড়িয়ে যায়। সুতরাং মুসলমানদের উচিত হিন্দুদেরকে প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা , কারন এই হিন্দুরা যদি মুসলমানদের মত আচরন করত , তাহলে ভারতে আজকে একটা মুসলমানও থাকতে পারত না। যেমনটা আই এস সিরিয়া ইরাক থেকে সব খৃষ্টান , ইয়াজিদি ও শিয়া দেরকে হয় হত্যা করেছে , না হয় তাদের ভিটে মাটি থেকে উচ্ছেদ করেছে।

কিন্তু মুসলমানরা কি হিন্দুদের এই উদারতা থেকে কোন শিক্ষা নেবে ?

কথা

„যারা মনে করেন ঈশ্বর সকল ধর্ম প্রান মানুষের আশা পূরণ করেন ।
আপনাকে উপদেশ দিব আমি । কোন দেশে গিয়ে সংখ্যালঘুদের খাতায় নাম লেখান ।”

“ধর্ম থেকে আমরা কি কি পায় ?
দেশ আমাদের কি কি দেয় ?”

“ঈশ্বরই যদি ধর্ম সৃষ্টি করে থাকেন তবে এত ধর্মমত তৈরি করল কেনো ?
ভদ্র লোকের এক কথা । ঈশ্বর কি তবে ভদ্রলোক না ?”

“ রেফ হলে মেয়েদের ইজ্জত যায় ছেলেদের ইজ্জত যায় না
কেনো ?”

“দেশ বড়ো না , ধর্ম বড়ো ?”

“ ধর্মমত যদি কারু মৌলিক অধিকার হরণ করে তবে তাকে সঙ্গে সঙ্গে ত্যাগ করুণ ।”

““ মিলনটাই হোক ভাবনা ।”
...এক তরফা মানবতা প্রতিষ্ঠা হয় না ...”

বর্তমান পৃথিবীতে বাঁচতে হলে সংখ্যা হয়ে বাঁচা যাবে না । মানুষ হয়ে বাঁচতে হবে ।”

বেঁচে থাকাটা যখন বোঝা হয় তখন মৃত্যু ডাকে । বেঁচে থাকাটা যখন আনন্দময় হয় তখন বন্ধুরা ডাকে ।

           -নাস্তিক দেব

ইতিহাস হেরোডেটাস

মেস্ত্রিউস প্লুতার্ক কিন্তু হেরোডোটাস   কে মিথ্যার জনক হিসেবে উল্লেখ করেছেন , হেরোডোটাস কিন্তু জন্মেছিলেন খ্রিস্টপূর্ব ৪৮৪ , তখনকার কথা এখন কি কোন ভিত্তি আছে ? তেমনি গ্রিক দেব দেবী আর শ্রী রামচন্দ্রের দশভুজা দুর্গা কিন্তু একনয় ।

ফেসবুকে দেওয়া মন্তব্য

যারা ধর্মমানে তারা হিন্দু মুসলিম শব্দটাকে আড়াল করে । কিন্তু যারা নাস্তিক তারা হিন্দু মুসলিম শব্দটা সামনে নিয়ে আসে বলে তারা সাম্প্রদায়িক । খোঁজ নিয়ে দেখলে দেখা যাবে তারাই বড়ো সাম্প্রদায়িক । যারা হিন্দু মুসলিম শব্দটাকে আড়াল করতএ ব্যস্ত । মন্দির মসজিত কারা ভাঙে ? খোঁজ নিয়ে দেখুন এই ভন্ডগুলোই ভাঙে ।

ফেসবুকে দেওয়া মন্তব্য

ভারতে প্রতিদিন মুসলিমদের উপর অত্যাচার চলে । এটা ডাহা মিথ্যা কথা । ভারত স্বাধীন হয়েছে 71 বছর । মোদীর তিন বছর । তার মানে 67 বছরকেও তিন বছর বলে চালিয়ে দিচ্ছো । সারা ভারতটা ভুল কথা । পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমরা কখনই কোনো কালেই অত্যাচারিত না । আমি চ্যালেন্স দিয়ে বলতে পারি । বরং পশ্চিমবঙ্গে আজও যে সব দাঙ্গা হচ্ছে তাতে হিন্দু মুসলিম উভয়ই দায়ি । গোরুর মাংস নিয়ে যা চলছে তা শুধু মুসলিমদের উপর চলছে না দলিদদের উপরও চলছে । এ নিয়ে প্রতিবাদও হচ্ছে । এ সব প্রতিবাদ করছে হিন্দুরাই । তুমি নিশ্চয় জানো কলকাতা ধর্মতলায় হিন্দু রা গোরুর মাংস খেয়ে মুসলিমদের হয়ে হিন্দুরাই প্রতিবাদ করছে । আখলাক কে নিয়ে সারা দেশের এক থেকে দেড় শো জন কবি , সাহিত্যিক , বিজ্ঞানী ও বুদ্ধীজীবীরা সরকারের দেওয়া পদক সরকারকে ফিরিয়ে দিয়েছেন । আর বাংলাদেশের সংখ্যালঘু অত্যাচার হয় সে দেশের মুসলিমরা স্বিকারই করে না । দু একজন মুক্তমনা ছাড়া । আর প্রতিবাদ তো দুরের কথা । বিডির সরকারের এমন কোন নজীর নেই যে এই সব অত্যাচারিদের বিরুদ্ধে কোন আইনি ব্যবস্থা নিয়েছেন বিডি সরকার । কোন সরকারি নেয় নি । না আওয়ামীলীগ না বিএনপি না জাতীয় পাটি । যখনই যা কিছু ঘটেছে সরকার ক্ষতিপূরণ দিয়ে দায় সেরেছে । আজ কে সরকার যদি প্রশাসনিক ভাবে হিন্দুদের নিরপত্তা দিতে পারত । তবে 28% হিন্দু 8% হতো না বিডিতে ।

ফেসবুকে দেওয়া মন্তব্য

তোমাদের সব কথা ঠিক । তবে এই সিরিয়ালগুলো নারীদের অনেক ব্যপারেই চোখের পর্দা সরিয়ে দিচ্ছে । যা এতদিন এ সব গোপন ছিল । দু’টো বৌ বা দুটো বয়ফ্রেন্ড এটা যে সাংসারিক একটা সমস্যা সেটি কিন্তু সিরিয়ালগুলোতে বেশ ফুটিয়ে তোলে । শরৎ চন্দ্র যখন সামাজিক কুট কাচিলি নিয়ে লিখত তখন তাকেও কিন্তু সামাজিক সমালোচনা সহ্য করতে হতো । অনেকেই বলত শরৎ চন্দ্রের বই পড়লে বাড়ির ছেলে মেয়েরা নষ্ট হয়ে যাবে । তাই সব নতুন ধারার সমালোচনা আছে । বর্তমান সমাজ আরও পরিবর্তন দরকার তা না হলে মানুষ হিসেবে বিপর্যয়ে পড়তে হবে । আর নারী-পুরুষের যে অতীত বৈষম্য চলে আসছে তা ভাঙার প্রয়োজন ।

ভারতীয় দর্শন

ভারত যেমন আস্তিক্য দর্শনের দেশ তেমনি আবার নাস্তিক্য দর্শণেরও দেশ ।
তাই আপনি যদি ধর্ম প্রচারের জয়গান করার অধিকার রাখেন । ঠিক তার উল্টো দিকটাও করার অধিকার কেউ না কেউ রাখেন । তাই, বিরোধীতা না । তাদের বিরোধীতা না করাই বুদ্ধিমানের কাজ  । কেননা নাস্তিকরাও অধিকার রাখে ধর্ম বিরোধী প্রচার করার ।

      - নাস্তিক দেব

সোমবার, সেপ্টেম্বর ২৫

আমার ছোটবেলার পুজো

চারিদিকে উৎসবের গন্ধ । শহরের মধ্যে ঢুকলেই বিভিন্ন প্যান্ডেলের খুটখাট শব্দ পাচ্ছি । শহর এখন পুজোময় । অলিতে গলিতে , পাড়ায় পাড়ায় পুজোর শেষ টান চলছে । এখন তো আবার থিমের পুজো । সারা পৃথিবীটা চলে আসে পুজো প্যান্ডেলে । কিন্তু আমাদের সময় ? না । আমাদের ছোটবেলায় এসব ছিল না । তবুও সেসব আনন্দ বুকের ভিতর , চোখের ভিতর মমি হয়ে আছে ।

করতোয়া ঘেষা যে শহরটা আমার ছিল । তার নাম ছিল বগুড়া , শেরপুর ।ছোট্ট শহরটাতে ছিল গ্রাম আর শহরের উভয় আমেজ । নদীমুখী দুই পাড় জুড়ে ছিল ক্ষেত আর বাবুদের আম বাগান । পুজোর মুখে বর্ষার শেষ বাতাসে হেলে দুলে কাশফুল ঈশারায় জানান দিত । শরৎ উৎসবের আগমনী সুর । রোদের উত্তাপে টের পেতাম দূর্গা পুজোর আগমনী আনন্দ । বুঝতাম পুজো আসতে আর বেশি দেরি নেই । তুলোর মত সাদা মেঘ যখন কালো হতো । তখন মাঝে মাঝে বৃষ্টিও হতো । সঙ্গে ঝড়োহাওয়া আর মেঘের গর্জন থাকত । যখন মেঘ ডাকত আকাশে । আমরা ছোটোরা বলাবলি করতাম , দূর্গা বাপের বাড়ি আসবে বলে মহাদেব দূর্গা কে আসতে দিবেনা , আর তারজন্যই মহাদেব রাগে গর্জন করছেন । পুজোর আগে আকাশে মেঘ গর্জন করলেই এ সব বলতাম । আমরা ছোটরা ।

পুজো আসা মানে , মা-ঠাকুমাদের কাজ ফর্দি তৈরি হওয়া । ঘর ঝাড়া ,  কাপড় কাচা , নাড়ু , মোয়া বানানোর ধুম পড়ে যেত । সে কত রকমের নাড়ু - ক্ষিরের তক্তি , নারকেলের তক্তি , নারকেলের নাড়ু , মূগডালের নাড়ু , তিলের নাড়ু , খৈয়ের মোয়া , চাল ভাজার মোয়া , ভূষার নাড়ু । বাবা বস্তায় করে নারকেল নিয়ে আসত ।  তখনকার দিনে বরিশাল , নোয়াখালি থেকে বড় বড় নৌকা করে নারকেল  বিক্রি করতে নিয়ে আসত বারোদোয়ারী হাটে । বারোদুয়ারী ছিল আমাদের শহরের একমাত্র হাট । করতোয়ার পাড় ঘেষে লাগত সে হাট । আর সেই করতোয়ার পাড়ে সে-সব নৌকা বড় বড় মাস্তুল দিয়ে আটকে রাখত । নৌকায় উঠার জন্য বাঁশের সেঁতু বানিয়ে দিত । এক একটা নৌকা ছিল দেখার মত । বড়োরা বলত ওসব নাকি গহনার নৌকা । সারা শহর ও আশে-পাশের গ্রামের লোক সেখান থেকে নারিকেল কিনত ।

খুব ভাল মনে আছে । হ্যাজাক জ্বালিয়ে পুজো হতো । মন্ডপ সাজানো হতো পাড়ার কাকিমা, জেঠিমা ও ঠাকুমাদের পড়ার কাপড় চেয়ে নিয়ে এসে  । তবুও আনন্দটা ছিল মহামারির মত । পাড়ায় বড়দের মিটিং বসলে বুঝতে পারতাম পুজো হবে । তখন থেকেই চলতো মনের ভিতর পুজোয় কে কি করব ও কে কি নিব । আমাদের সময় এত বাহারি পোশাক-আশাক ছিল না । এত রকমের ফাস্ট ফুডও ছিল না । ছিলো , চপ , পেঁয়েজি ও সিংগাড়া । আমরা ছিলাম মিষ্টি খাওয়ার পোকা । পায়েস , লুচি , বেগুন ভাজা । এ সব ছিল সকালের খাবার । সঙ্গে মুড়ি , মুড়কি ,নাড়ু ও মিষ্টিও থাকত ।

চারিদিকে অন্ধকার তবুও খুশীর ইমেজ ছিল ঝাড়বাতির মত । প্রতিমার কাঠাম কাটা শুরু হলেই । প্রত্যেকদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠে হাতের তালুতে দাঁত মাজার গুড় নিয়ে দেখতে যেতাম প্রতিমার কাজ কতটা হলো । আমাদের পাড়ার প্রতিমা বানানো হতো । মৃগেন দত্তের ঠাকুর দালানে । এই কম্মটা চলত প্রতিমা রং হয়ে যতক্ষন না আসনে উঠত ।  প্রতিমা যখন টিন দিয়ে বানানো মন্ডপে নিয়ে যেতো । সে ছিল এক অদ্ভূত ফ্লিংস । মন্ডপের সামনে ঝুলানো থাকত চটের পাতলা পর্দা । আর চটের পর্দাটা থাকতো চারিদিকের খুটির সাথে বাঁধা । আমরা সেই চট ফাঁক করে উঁকি ঝুকি দিয়ে প্রতিমা দেখতাম । তখন চলত মন্ডব সাজানোর কাজ । বড় দাদারাই সে সব কাজ করত । মন্ডপের ভিতর থেকে বড়রা যখন বলত , কেরে । তখন দৌঁড়ে পালাতাম । এসব কিন্তু আমার একদম ছোটবেলার কথা বলছি । তখন কত বয়স হবে , আট কি দশ ।

এবার আসি মহালয়ার ভোরের কথায় ।  আমাদের একটা রেড়িও ছিল । রেডিওটার নাকি অনেক বয়স । যখন সবে রেডিওর চল শুরু হয় ঠিক সেই সময়কার । মা বলত ,আমাদের পাড়ায় নাকি আমাদের রেড়িও দিয়ে আর দু তিনটা ছিল । সেই রেডিও’র ব্যাটারি চেক করা থেকে সাউন্ড বারানোর জন্য তাঁরগুনা  দিয়ে এনট্রিনা লাগানোর কাজটা আগের দিনেই করে রাখতাম । সারারাত ছটফট করতাম কখন ভোর হবে । কান দুটো সজাগ থাকত কখন মহালয়ার আওয়াজ পাব । কেননা আগের দিনে অনেক মন্ডবেই মাইক লাগিয়ে মহালয়া বাজানোর রেওয়াজ ছিল । রেডিওটা চালু করে ভোর হওয়া অবধি মহালয় শুনতাম । তারপর রাস্তায় বেরিয়ে সোজা ঠাকুর দালানে যেতাম ।  আমার বেশ মনে আছে । মহালয়ের সকালে পাড়ার অনেকেই রাস্তায় বেড়িয়ে পড়ত । পুজোর আনন্দ শুরুটা ছিল মহালয়ার দিন থেকেই । কোন এক রবিবারে আসত পুজোর জামা প্যান্ড জুতো । রোববারের রহস্যটা আর বললাম না । ছোটবেলাটায় রোববারেই আসত প্রতি বছর  আমাদের জামা , জুতো , প্যান্ড । আমরা দুপুর বেলা ঠাকুর দেখতে যেতাম বন্ধুরা মিলে । শুরু হতো পাড়ার ঠাকুর দিয়ে । তারপর ঘোষপাড়ার । তারপর চণ্ডিমন্ডব । তারপরের গল্প আর মনে নেই ।

আমার ছোটবেলার পুজো
---------------------------------
দেবজ্যোতিকাজল

চারিদিকে উৎসবের গন্ধ । শহরের মধ্যে ঢুকলেই বিভিন্ন প্যান্ডেলের খুটখাট শব্দ পাচ্ছি । শহর এখন পুজোময় । অলিতে গলিতে , পাড়ায় পাড়ায় পুজোর শেষ টান চলছে । এখন তো আবার থিমের পুজো । সারা পৃথিবীটা চলে আসে পুজো প্যান্ডেলে । কিন্তু আমাদের সময় ? না । আমাদের ছোটবেলায় এসব ছিল না । তবুও সেসব আনন্দ বুকের ভিতর , চোখের ভিতর মমি হয়ে আছে ।

করতোয়া ঘেষা যে শহরটা আমার ছিল । তার নাম ছিল বগুড়া , শেরপুর ।ছোট্ট শহরটাতে ছিল গ্রাম আর শহরের উভয় আমেজ । নদীমুখী দুই পাড় জুড়ে ছিল ক্ষেত আর বাবুদের আম বাগান । পুজোর মুখে বর্ষার শেষ বাতাসে হেলে দুলে কাশফুল ঈশারায় জানান দিত । শরৎ উৎসবের আগমনী সুর । রোদের উত্তাপে টের পেতাম দূর্গা পুজোর আগমনী আনন্দ । বুঝতাম পুজো আসতে আর বেশি দেরি নেই । তুলোর মত সাদা মেঘ যখন কালো হতো । তখন মাঝে মাঝে বৃষ্টিও হতো । সঙ্গে ঝড়োহাওয়া আর মেঘের গর্জন থাকত । যখন মেঘ ডাকত আকাশে । আমরা ছোটোরা বলাবলি করতাম , দূর্গা বাপের বাড়ি আসবে বলে মহাদেব দূর্গা কে আসতে দিবেনা , আর তারজন্যই মহাদেব রাগে গর্জন করছেন । পুজোর আগে আকাশে মেঘ গর্জন করলেই এ সব বলতাম । আমরা ছোটরা ।

পুজো আসা মানে , মা-ঠাকুমাদের কাজের ফর্দি তৈরি হওয়া । ঘর ঝাড়া ,  কাপড় কাচা , নাড়ু , মোয়া বানানোর ধুম পড়ে যেতো । সে যে কত রকমের নাড়ু - ক্ষিরের তক্তি , নারকেলের তক্তি , নারকেলের নাড়ু , মূগডালের ভূষা  নাড়ু , তিলের নাড়ু , খৈয়ের নাড়ু , চাল ভাজার মোয়া , চিরা ভাজার নাড়ু ও ভূষার নাড়ু । বাবা বস্তায় করে নারকেল নিয়ে আসত । মা ঠাকুমারা খৈ বাড়িতেই ভাজত । খৈ দিয়ে তৈরি করতো মুড়কি । তখনকার দিনে বরিশাল , নোয়াখালি থেকে বড় বড় নৌকা করে নারকেল  বিক্রি করতে নিয়ে আসত বারোদোয়ারী হাটে । বারোদুয়ারী ছিল আমাদের শহরের একমাত্র হাট । করতোয়ার পাড় ঘেষে লাগত সে হাট । আর সেই করতোয়ার পাড়ে সে-সব নৌকা বড় বড় নোংগর দিয়ে আটকে রাখত । নৌকায় উঠার জন্য বাঁশের সেঁতু বানিয়ে দিত । এক একটা নৌকা ছিল দেখার মত । বড়োরা বলত ওসব নাকি গহনার নৌকা । সারা শহর ও আশে-পাশের গ্রামের লোক সেখান থেকে নারিকেল কিনত ।

খুব ভাল মনে আছে । হ্যাজাক জ্বালিয়ে পুজো হতো । মন্ডপ সাজানো হতো পাড়ার কাকিমা, জেঠিমা ও ঠাকুমাদের পড়ার কাপড় চেয়ে নিয়ে এসে  । তবুও আনন্দটা ছিল মহামারির মত । পাড়ায় বড়দের মিটিং বসলে বুঝতে পারতাম পুজো হবে । তখন থেকেই চলতো মনের ভিতর পুজোয় কে কি করব ও কে কি নিব । আমাদের সময় এত বাহারি পোশাক-আশাক ছিল না । এত রকমের ফাস্ট ফুডও ছিল না । ছিলো , চপ , পেঁয়েজি ও সিংগাড়া । আমরা ছিলাম মিষ্টি খাওয়ার পোকা । পায়েস , লুচি , বেগুন ভাজা । এ সব ছিল সকালের খাবার । সঙ্গে মুড়ি , মুড়কি ,নাড়ু ও মিষ্টিও থাকত ।

চারিদিকে অন্ধকার তবুও খুশীর ইমেজ ছিল ঝাড়বাতির মত । প্রতিমার কাঠাম কাটা শুরু হলেই । প্রত্যেকদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠে হাতের তালুতে দাঁত মাজার গুড় নিয়ে দেখতে যেতাম প্রতিমার কাজ কতটা হলো । আমাদের পাড়ার প্রতিমা বানানো হতো । মৃগেন দত্তের ঠাকুর দালানে । এই কম্মটা চলত প্রতিমা রং হয়ে যতক্ষন না আসনে উঠত ।  প্রতিমা যখন টিন দিয়ে বানানো মন্ডপে নিয়ে যেতো । সে ছিল এক অদ্ভূত ফ্লিংস । মন্ডপের সামনে ঝুলানো থাকত চটের পাতলা পর্দা । আর চটের পর্দাটা থাকতো চারিদিকের খুটির সাথে বাঁধা । আমরা সেই চট ফাঁক করে উঁকি ঝুকি দিয়ে প্রতিমা দেখতাম । তখন চলজ মন্ডব সাজানোর কাজ । বড় দাদারাই সে সব কাজ করত । মন্ডপের ভিতর থেকে বড়রা যখন বলত , কেরে । তখন দৌঁড়ে পালাতাম । এসব কিন্তু আমার একদম ছোটবেলার কথা বলছি । তখন কত বয়স হবে , আট কি দশ ।

এবার আসি মহালয়ার ভোরের কথায় ।  আমাদের একটা রেড়িও ছিল । রেডিওটার নাকি অনেক বয়স । যখন সবে রেডিওর চল শুরু হয় ঠিক সেই সময়কার । মা বলত ,আমাদের পাড়ায় নাকি আমাদের রেড়িও দিয়ে আরও দু তিনটা ছিল । সেই রেডিও’র ব্যাটারি চেক করা থেকে সাউন্ড বারানোর জন্য তাঁরগুনা  দিয়ে এনট্রিনা লাগানোর কাজটা আগের দিনেই করে রাখতাম । সারারাত ছটফট করতাম কখন ভোর হবে । কান দুটো সজাগ থাকত কখন মহালয়ার আওয়াজ পাব । কেননা আগের দিনে অনেক মন্ডবেই মাইক লাগিয়ে মহালয়া বাজানোর রেওয়াজ ছিল । রেডিওটা চালু করে ভোর হওয়া অবধি মহালয় শুনতাম । তারপর রাস্তায় বেরিয়ে সোজা ঠাকুর দালানে যেতাম ।  আমার বেশ মনে আছে । মহালয়ের সকালে পাড়ার অনেকেই রাস্তায় বেড়িয়ে পড়ত । প্রাতঃভ্রমনও হত সঙ্গে মহালয় শুনার পর্বটাও চলত । প্রত্যেক বাড়ির ভিতর থেকে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের দরাজ কন্ঠের মহালয়া ভেসে আসত ।  পুজোর আনন্দ শুরুটা হতো মহালয়ার দিন থেকেই ।

মহালয়া আসা মানেই পুজোর পোশাক ।  কোন এক রবিবারে চলে আসত পুজোর জামা প্যান্ড জুতো । রোববারের রহস্যটা আর বললাম না । ছোটবেলাটায় রোববারেই আসত প্রতি বছরের পুজোর জামা , জুতো , প্যান্ড । আমরা দুপুর বেলা ঠাকুর দেখতে যেতাম বন্ধুরা মিলে । শুরু হতো পাড়ার ঠাকুর দিয়ে । তারপর ঘোষপাড়ার । তারপর চণ্ডিমন্ডপ । তারপরের গল্পটা আর মনে নেই ।

এবার আসব বিজয় দশমীর কথায় । চারিদিকে বিষাদের একটা থমথমে পরিবেশ তৈরি হত । ঠিক বুঝতে পারতাম পূজোর আজ থেকে শেষ । সকালে ঘুম থেকে ওঠে দেখতাম বাবা দাঁড়িপাল্লা ও বাটকারা ধুয়ে তাতে সিঁদুর দিতে । মা অথবা ঠাকুরমাকে দেখতাম যাত্রার থালা সাজাতে । যাত্রার থালায় থাকত পুঁটি মাছ , দাঁড়িপাল্লা-বাটকারা , গাছ কৌটে , পুরোনো দিনের কাঁচা টাকা , আমের পল্লব সহ ঘট , বই ও বিভিন্ন মসলা । আর থালার মাঝে জ্বলত তেল প্রদীপ । বিজয় দশমী মানেই যে বিষাদ ছিল । তা কিন্তু একদম না । বিকেল না হওয়া অবধি বোঝা যেতো না বিজয় দশমীর আনন্দটা কতটা মধুর । সেই করতোয়ার পরিচিত রূপ অন্য এক করতোয়ায় সাজত । বাবা আর ভূপেন জেঠু মিলে নৌক ভাড়া করত । সেই নৌকতে থাকত আমাদের দুটি পরিবারের সবাই । সারা শহরের প্রতিমা শ্মশান ঘাট পেরিয়ে বারোদুয়ারীর ঘাটে গিয়ে নৌকায় প্রজিশন হতো । ছোট খাটো নদীর পাড়ে মেলাও বসত । নদী সেদিন মহা মিলনের আনন্দ ধাম হয়ে সেজে উঠত । সন্ধ্যে লাগার আগেই প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া শুরু হতো । আগে মন্ডপের প্রতিমা বিসর্জন হতো । তারপর শুরু হতো বারোয়ারী প্রতিমা । শ’য়ে শ’য়ে নৌকা ভাসত সেদিন নদীটির বুকে । ঢাক আর মাইকের আওয়াজে নদী’র জল কেঁপে উঠত । শত শত হ্যাজাকের আলোতে সে এক দেখবার মত দৃশ্য । সব শেষে যখন বাড়ি ফিরতাম । তখন মনটা ভার হয়ে আসত । বাড়ি ফিরে হাত-পা ধূয়ে আগে ঠাকুর ঘরে যেতে হতো । কেননা আমাদের নিয়ম ছিল যাত্রার থালা দেখে । তারপর সবাইকে প্রনাম করে তারপর ঘরে প্রবেশ ।ঠাকুরমা ততক্ষণে প্লেটে করে বিভিন্ন রকমের নাড়ু , তক্তি ও মিষ্টি দিয়ে আমাদের হাতে হাতে দিত । এখানে থেকেই শুরু হতো দূর্গাউৎসবের শেষ টানের নতুন পর্ব । সকাল হলেই চলত প্রনাম আর কোলাকোলি । একদম শেষ হত বিজয়ার চিঠি লেখার পর্ব দিয়ে । এই চিঠির পর্বটা চলত কালী পুজো অবধি ।